মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি সার্বজনীন কালী মন্দির।প্রায় চারশত বছরের প্রাচীন মন্দির।শনিবার-১সোমবার পৌষকালী পুজো ঘিরে গদখালি কালী মন্দির প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী মেলা।হাজারো ভক্তের পদচারণায় মুখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ।মেলায় বসেছে নাগরদোলা,মিষ্টি মিঠাই,কসমেটিস, আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের হরেক রকমের দোকান।কেনাকাটায় ব্যস্ত নারী,পুরুষ, শিশু সব বয়সী মানুষ। আয়োজকরা বলছেন, কয়েক শত বছর ধরে পুজো উপলক্ষ্যে মেলার আয়োজন হয়ে আসছে।আগে একদিনের মেলা হলেও বিগত ২২ বছর ধরে তিনদিনের মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।সর্বস্তরের মানুষের সমাগমে মেলা পরিপূর্ণ।শনিবার বিকেলে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ধরে গদখালি বাজার গিয়ে পৌঁছায়।সেখান থেকে কয়েক’শ গজ এগিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে অবস্থিত গদখালি সার্বজনীন মন্দির।
ভিতরে ঢুকতে প্রধান ফটকেই ব্যাপক ভিড়।কালীপুজোর প্রসাদ নিতে ভক্তদের তোড়জোড়।সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় মুখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ।হাজারো ভক্তের কেউ আরাধনায়,কেউ ধ্যানে,আবার অনেকেই মেলায় কেনাকাটায় ব্যস্ত।মেলা ঘুরে দেখা যায়,কয়েক শত স্টলে কেনাকাটার ধুম পড়েছে।গ্রামীণমেলার ঐতিহ্যের কোন কিছুর কমতি নেই।নাগরদোলায় শিশুদের পাশাপাশি নানা বয়সী নারী-পুরুষও আনন্দে মাতোয়ারা। হরেক রকমের খেলনা ও কসমেটিসের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানীরা।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন,মেলা শুরু হলো আজ,জমছেও ভাল।বেচাকেনা ভাল হবে আশা করছি।গোপালগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন,প্রথমবারের মত এবার মেলায় দোকান দিয়েছি।বিক্রি মোটামুটি ভাল হচ্ছে।আশাকরি বাকী দুদিন আরও ভাল বিক্রি হবে।যশোরের নওয়াপাড়া থেকে আসা অপর ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র জানালেন,কসমেটিকসের জিনিসের চাহিদা বেশি।গ্রামের সব বয়সী মানুষের ভিড় করছে। বেচাকেনা ভাল হচ্ছে।মেলায় দা,কাস্তে,বটি ইত্যাদি জিনিসের পসরা নিয়ে বসা ব্যবসায়ী চন্দ্রা রক্ষিত বলেন,প্রতিবারই মেলায় দোকান দিই,এবারও দোকান দিয়ে বসেছি।বিক্রিও ভাল হচ্ছে।আসবাবপত্র বিক্রির দোকানও বসেছে। সেখানেও ক্রেতার ভিড় লক্ষ করা গেছে।মেলার অন্যতম আকর্ষণ বাহারী মিষ্টি বিক্রির ধুম চোখে পড়েছে।মিষ্টির দোকানীরা ব্যস্ত সময় পার করছে।এছাড়া পাপড়, ফুচকা বিক্রেতাদেরও বিক্রির ধুম ছিল।
মেলায় কথা হয় দর্শনার্থীদের সঙ্গে। ঐতিহ্যবাহী মেলায় এসে উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরাও । বেনাপোলের পাঠবাড়ি গ্রামের স্কুল ছাত্র মিলন কুমার (১২) জানায়, আমার মায়ের সঙ্গে এসেছি পৌষকালী পুজো দেখতে।ভিড়ের মধ্যে মায়ের সঙ্গে ঘুরছি।প্রসাদ নিয়ে বাড়ি ফিরবো।
বসুন্দিয়ার ইরাবতী ঘোষ জানান,প্রতিবছর পুজোয় আসি। এবারও মায়ের পুজো দিতে এসেছি।পরিবারের আরও লোকজন আছে।গদখালি সার্বজনীন কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র ভক্ত জানান,(শনিবার-সোমবার)পৌষকালী পুজো উপলক্ষ্যে তিনদিনের মেলা শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে একদিনের মেলা ছিল।১৯৯৬ সাল থেকে পুজোয় তিনদিনের মেলার আয়োজন হচ্ছে।প্রতিবছর জমজমাট মেলা হয়।এবার মেলায় ছোট বড় প্রায় ৬’শ স্টল বসেছে।হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ।তিনি আরও বলেন,মেলার নিরাপত্তায় ৪০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দল রয়েছে।পাশাপাশি পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে।এছাড়াও মেলায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।নিরাপত্তা নিয়ে কোন সংশয় নেই।