আলু এমন একটি সবজি যা প্রায় সব রান্নাঘরেই থাকে। আলু রান্না করে খাওয়া ছাড়াও কাঁচা আলুর রস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
তবে আপনি জানেন কি? আলুর রস ফাইটোকেমিক্যালস, ভিটামিন এবং খনিজ যেমন ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস, বি ভিটামিন এবং তামার খুব ভালো উৎস।
এটি অন্যান্য ফল এবং উদ্ভিজ্জ রসের মতো খেতে সুস্বাদু না। তবে অন্যান্য অনেক ফল বা উদ্ভিজ্জের থেকে বেশি উপকারী। তাহলে জেনে নিন আলুর রসের উপকারিতাগুলো-
# আলুর রসে থাকা ক্ষার আপনার পাচনতন্ত্রকে উন্নত করতে সহায়তা করে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, আলুর রস অ্যাসিড রিফ্লাক্স হ্রাস করতে পারে, গ্যাস্ট্রাইটিস থেকে মুক্তি দেয় এবং পেটের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।
# পেটের আলসারের চিকিৎসায় আলুর রস খেতে পারেন। এজন্য খাওয়ার এক ঘন্টা আগে আধা কাপ আলুর রস প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পান করুন।
# আলুর রসে রয়েছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা সংক্রমণ এবং সাধারণ সর্দি-কাশি বা ফ্লুর সঙ্গে লড়াই করতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত আলুর রস খেতে পারেন।
# লিভারের কার্যকারিতা উন্নতি করতে আলুর রস খুবই ভালো। আলুর রস শরীরে একটি ডিটক্সাইফাইং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। যা শরীর থেকে বর্জ্য পণ্য এবং টক্সিন নির্মূল করে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
# বাতজনিত রোগের চিকিৎসায় আলুর রস দুর্দান্ত প্রতিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা হাত এবং পায়ের জয়েন্টের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কমাতে আলুর রস খুবই কার্যকরী। এজন্য খাওয়ার আগে এক থেকে দুই চামচ কাঁচা আলুর রস পান করুন।
# আলুর রস শরীরের শক্তি স্তর বৃদ্ধি করে। এতে প্রাকৃতিক শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যা শরীরে শক্তি উৎপাদন করে। এছাড়াও আলুর রসে বি ভিটামিনের উপস্থিতি শরীরের শর্করাগুলোকে গ্লুকোজে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে। যা আপনার দেহের শক্তির মাত্রা বাড়ায়।
# কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে পারে আলুর রসে থাকা পটাসিয়াম। এটি হলো একটি ইলেক্ট্রোলাইট। যা দেহের তরলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে পেশীর কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
# এটি হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতি করে। আলুর রসে থাকা পটাসিয়াম ব্লকড ধমনীগুলো পরিষ্কার করতে এবং হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। যা ধমনীতে হৃদরোগ এবং ভাস্কুলার ক্যালসিকিফিকেশন রোধ করতে সহায়তা করে।
# কাঁচা আলুর রস ওজন কমাতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি। যা দ্রুত খাবার হজম করতে সহায়তা করে। খাওয়ার পরে আলুর রস পান করতে পারেন। এতে আপনার ক্ষুধা কমে যাবে। যা আপনাকে অত্যধিক খাওয়া থেকে বিরত রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
# আলুর রসে থাকা জিঙ্ক এবং ভিটামিন সি ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এর কোলাজেন এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ কোষের বৃদ্ধির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আলুর রস নতুন কোষ তৈরি করে দ্রুত ক্ষত নিরাময় করে।
# আলুর রসে বি ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে ত্বকের কোষগুলোকে পুষ্ট করতে সহায়তা করে। যা আপনার বলিরেখা এবং বয়সের দাগ কমাতে সাহায্য করবে। তাই আপনার ত্বক সুস্থ রাখতে নিয়মিত আলুর রস পান করুন।
কীভাবে আলুর রস তৈরি করবেন?
জেনে নিন পদ্ধতি-
একটি আলু ভালোভাবে পরিষ্কার করে ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এবার এর সঙ্গে পানি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে রস ছেঁকে নিন। চাইলে এর সঙ্গে অন্যান্য যে কোনো ফল বা সবজির রসও মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে কাঁচা আলুর রসই আপনাকে বেশি ভালো ফলাফল দেবে। সূত্র: বোল্ডস্কাই।