প্রতি বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা মূল্যমান চাল নষ্ট হয়। যেখানে প্রতি বছর গড়ে আমদানি হয় প্রায় ১৬ লাখ টন চাল, নষ্ট বা অপচয় হয় ২৮ লাখ টন।
যার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল স্ট্যাটিস্টিকস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
দেশে চালের উৎপাদন ছাড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৭২ লাখ টন। কিন্তু উৎপাদিত চালের ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা
প্রায় ২৮ লাখ টন ক্ষতি হচ্ছে বছরে। এর মধ্যে হারভেস্টকালে ক্ষতি ১১ লাখ ২৩ হাজার টন এবং পোস্ট হারভেস্ট
ক্ষতি ১৬ লাখ ৮৮ হাজার টন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০১৮ সালে আউশ মৌসুমে অপচয় হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ টন চাল।
এরমধ্যে হারভেস্ট বা মাড়াইকালে ৮২ হাজার ২৭৪ টন এবং পোস্ট হারভেস্ট অপচয় ছিলো ১ লাখ ৩৩ হাজার ২০৯ টন।
আমনে অপচয় হয়েছে ১১ লাখ ৩১ হাজার ৩৯৯ টন চাল।
এরমধ্যে হারভেস্টকালে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮২ টন ও পোস্ট হারভেস্টকালে ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫১৭ টন চাল অপচয় হয়।
বোরো মৌসুমে অপচয় হয়েছে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৬ টন চাল, যার মধ্যে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪২ টন হারভেস্ট ও ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৪ টন পোস্ট হারভেস্ট।
জানা যায়, ধান কাটা, হ্যান্ডলিং বা মাঠ থেকে নিয়ে আসা, থ্রেসিং বা মাড়াই, শুকানো, গুদামজাত ও পরিবহন, এ
৬টি ধাপের প্রতিটিতেই অপচয় হয় চাল।
বিশ্বের প্রায় সব দেশে ময়েশ্চার মিটার মেশিন দিয়ে আর্দ্রতা পরিমাপ করে তারপর ধান কাটার সিদ্ধান্ত নেন কৃষক।
কিন্তু আমাদের দেশে চোখের দৃশ্যমান অভিজ্ঞতার আলোকে ধান কাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে অপচয় হয় ১ থেকে
৩ শতাংশ চাল। ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তাবন্দি করার ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে ব্যবহার হয় কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার। দেশে ১ লাখের
বেশি এ যন্ত্রের চাহিদা থাকলেও ব্যবহার হচ্ছে ১ হাজারের কম। প্রথাগত পদ্ধতি ধান মাড়াইয়ের ফলে এ প্রক্রিয়ায় নষ্ট
হচ্ছে ২ থেকে ৬ শতাংশ চাল। এছাড়া হ্যান্ডলিংয়ে ২ থেকে ৭ শতাংশ, শুকানোর সময় ১ থেকে ৫ শতাংশ, গুদামজাতে
২ থেকে ৬ শতাংশ এবং পরিবহনে ২ থেকে ১০ শতাংশ চাল অপচয় হয়।