ছাত্র-জনতার আন্দোলন কেন্দ্র করে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪৬ দিনে বাংলাদেশে কী ঘটেছিল; কতসংখ্যক মানুষ হতাহত হয়েছিল; কেমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছিল এবং এ জন্য কারাই বা দায়ী- এসবের বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। এরই ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের প্রতিনিধিরা এখন বাংলাদেশে, চলছে তাদের নানামুখী তদন্ত। ইতোমধ্যে তাদের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি দিয়ে একগুচ্ছ তথ্য জানতে চেয়েছে পুলিশের কাছে।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ তথ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত।
জানা গেছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি দিয়ে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে কতজন নিহত হয়েছেন, তাদের পেশাগত পরিচয় কী, কতজন আহত হয়েছেন, কতটি মামলা হয়েছে, কতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলায় পুলিশ মোট কত রাউন্ড গুলি করেছে, আন্দোলনকালে কোন কোন কর্মকর্তা মাঠ পুলিশকে গুলির নির্দেশ দিয়েছে, পুলিশের গুলিতে কতজন মারা গেছে, কোন কোন এলাকায় সর্বাধিক সহিংসতা ঘটেছে, কী ধরনের সহিংসতা হয়েছে- এমন আরও নানা তথ্য জানতে চেয়েছে। এ ছাড়া ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের দিন পর্যন্ত কতজন হতাহত হয়েছে এবং ৫ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কতজন হতাহত হয়েছে তা জানতে চেয়েছে পুলিশের কাছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত দলের চাহিদানুযায়ী ইতোমধ্যে সারাদেশ থেকে তথ্য আনতে পুলিশের সব ইউনিটে চিঠি দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। সদর দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ইউনিটের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ পর্যায়ে। সব ইউনিট থেকে তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পর তা ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত দলের কাছে তা হস্তান্তর করবে পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনী অভ্যন্তরীণ আটটি পৃথক সংস্কার কমিটি গঠন করেছে এবং সংস্কারের প্রস্তাবনা নিয়ে বৈঠক করেছে।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের সদস্যরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের সত্যতা উদঘাটন এবং দায়দায়িত্ব চিহ্নিত করণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেবে। তদন্তের প্রক্রিয়া গোপনীয় থাকবে এবং এই বিষয়ে তদন্ত দলের সদস্যরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না। জাতিসংঘের হাইকমিশনার দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের নেতৃত্বে রয়েছেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম