রাজনীতিতে বিরোধী পক্ষ জরুরী। বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করবে এটাই গনতন্ত্র। কিন্তু আমাদের দেশের বিরোধী দলের নেতারা কখন কি বলেন বুঝে বলেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বি এন পি অন্যতম একটি বৃহৎ বিরোধী দল। দীর্ঘ সময় দলটি রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। এখন তারা কৌশল আর নেতৃত্বের ব্যর্থতায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় নেই। জাতীয় সংসদ থেকেও পদত্যগ করে দলটি এখন রাজনীতি থেকে ছিটকে পরেছে। চেষ্টা করেও সংগঠিত করতে পারছে না বি এন পি। যারা রাজনীতি নিয়ে চর্চা করেন তাদের অনেকেরই ধারনা নেতাদের ভুল সিদ্ধান্ত এবং লাগামহীন বক্তব্য দলটিকে এই অবস্থানে দাড় করিয়েছে।
১৪ বছরেও দলটি জনস্বার্থে একটি সফল আন্দোলন জমাতে পারেনি। নিত্য অফিস পাড়ায় লিখিত বক্তব্য পড়ে মিথ্যাচার ছড়িয়েছে। শুনে নেতা কর্মীরাও হতাশ হয়েছে। ক্ষমতায় যেতে আগুন সন্ত্রাস করে মানূষ হত্যা করেছে। এই সন্ত্রাস জনগন সমর্থন করেনি। উচিৎ ছিল এখানেই থেমে গিয়ে কৌশল বদলের। তা না করে দলটি বেপরোয়া হয়ে মিথ্যাচার করে সরকারকে জনতার মুখোমূখি করতে চেয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াও খালেদা জিয়ার উপহাস করা বক্তব্য জনগন গ্রহন করেনি। জামাত কে সঙ্গী করে জোট বেঁধেছে নীতিহীন দলছুট নেতাদের সাথে। দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্নসাধের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলে গেছে। দলের টাকায় তারেক লন্ডনে বিলাসী জীবন কাটাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নেতাকর্মীরা দ্বন্দ্বে বিভক্ত। জামাত প্রীতি দলের মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপটি মেনে নেয়নি। সব চেয়ে বড় কথা হলো দেশের সার্বিক উন্নয়নের বাস্তবতাকে অস্বীকার করে দলটি অজনপ্রিয় হয়েছে।
সরকার প্রচারনায় কান না দিয়ে দেশকে বদলে দিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশে যে উন্নয়ন করেছে বি এন পি’র শাসনামলে তার ৫% শতাংশও করতে পারেনি। পদ্মা সেতু নিয়ে বি এন পি নেত্রী ব্যঙ্গ করেছেন, সেই সেতু এখন দেশের অহঙ্কার। পদ্মা সেতুতে উঠতে নিষেধ করেছিলেন খালেদা জিয়া। দক্ষিন বঙ্গের বি এন পি নেতারা এখন পদ্মা সেতুর উপর দিয়েই চলাচল করে। কারও জীবনের রিস্ক হয়নি, সেতু ভেঙ্গেও পরেনি। দলের নেতারা এখনও কি তাদের নেত্রীর কথাটি মান্য করবেন নাকি সেতুর বাস্তবতাটি? দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেছেন ১০ই ডিসম্বরের পর দেশ পরিচালনা করবেন বেগম খালেদা জিয়া। ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসটিও শেষ হয়ে গেল। সরকার পরিচালনা করছেন শেখ হাসিনাই। বি এন পি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নাকি “বাই চান্স হয়ে গেছে”। নাগরিক হিসাবে কতজন মানুষ এই বক্তব্যকে সমর্থন করে? দলের আরেক নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন দেশের সংবিধানই বদল করে ফেলবেন ক্ষমতা পেলে। যারা দেশের সংবিধানকে মানেনা তাদের দেশে ৯৬ রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার কি থাকা উচিৎ? বি এন পি জোটের নেতা ভি পি নূরের কাছে লিষ্ট আছে ১০ তারিখে ২৭ ব্যক্তিকে নিয়ে একটি বিশেষ বিমান উড়ে যাবে। প্লেন রেডি রয়েছে। মাহামুদুর রহমান মান্না হিসাব দেখিয়ে বলেছেন দেশ আর মাত্র ৫ মাস চলার অর্থ দেশে রয়েছে তারপর দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মত হবে। যে যা’ই বলেছে তার কোনটাই হয়নি। বরং করোনা এবং রাশিয়ার যূদ্ধের কারনে পৃথিবীর বহু দেশে সঙ্কট শুরু হলেও বাংলাদেশে তা হয়নি। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে লোডশেডিং এর চাপ কিছুটা হয়েছে কিন্তু দেশ অচল হয়ে যায়নি। তার চেয়েও বড় কথা ব্যংকিং সেক্টরে ব্যপক লুট তরাজ হয়েছে কিন্তু দেশের প্রবৃদ্ধি ব্যহত হয়নি। দেশের উন্নয়নের গতি থেমে যায়নি।
নতুন বছরে দেশে নির্বাচনি হাওয়া বইছে। রাজনীতি এর লক্ষ্যটি হলো জনগনের সমর্থন নিয়ে সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ বছরেই নির্বাচনি ঘোষনা আসবে, তা আগাম ঘোষনাও হতে পারে। নেতারা জনগনের কাছে ভোট চাইতে গিয়ে কি বলবে? যদি কেউ প্রশ্ন করে আপনাদের কোন কথাটি সত্য? কি জবাব দিবেন এই নেতারা? বি এন পি তাদের কোন অর্জনটিকে জনগনের কাছে নিয়ে যাবে ভোট চাইতে? নির্বাচিত হলে কে হবেন আপনাদের প্রধানমন্ত্রী বি এন পি নেতাদের কি সেই উত্তরটি জানা আছে? এসব কারনেই বি এন পি নির্বাচনে যেতে চায়না। দলটি চায় আওয়ামী লীগকে দোষী বানিয়ে জনগনের আদালতে দাড় করাতে। কিন্তু জনগন রাজনীতিটি বুঝে ফেলেছে। বর্তমান সরকারের কিছু নেতা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। সরকার তাদেরকে চিহ্নিত করে ফেলেছে। অভিযুক্তরা দলের মনোনয়ন না পেলে ভোটের চিত্রটি কি হবে? বি এন পি কি বিরোধী দলের আসনে বসতে পারবে? বি এন পি তা পারুক বা না’ই পারুক, এবার নির্বাচনে না গেলে বি এন পি দল হিসাবে স্বচল থাকতে পারবে মনে হয়না।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান