কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পুর্ব রামরামসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বহিরাগত লোকজন দিয়ে সহকারী শিক্ষকদের হেনস্তা, গালিগালাজ এবং বিদ্যালয়ে আসলে মেরে পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি প্রদানের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছমির উদ্দিন শিক্ষকদের পক্ষে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা যায়, কিছু দিন আগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগম স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় হাজতবাস করেন। হাজতবাস করার কারনে কতৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সহকারী শিক্ষক ছমির উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব দেন। এমতবস্থায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হলে অফিসের নির্দেশনা ও ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছমির উদ্দিন। এর কিছুদিন পর সাময়িক বরখাস্ত তুলে নেয়া হলে গত ৮ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগম বিদ্যালয়ে যোগদান করে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছমির উদ্দিন কর্তৃক গঠনকরা কমিটি পছন্দ না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগম যোগদান করার পর থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছমির উদ্দিন সহ অপর দুই সহকারী শিক্ষক তুলশী রানী ও সুমনা সরকারের উপর দোষারোপ করে গালিগালাজ, হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখেন।
গত ২০ ডিসেম্বর সকালে সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে যথারীতি পাঠদান শুরু করলে প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগম আবারও তাদের উদ্দেশ্য করে গালাগাল করতে থাকেন। শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলে খাদিজা বেগম মোবাইল করে তার স্বামীকে লোকজন নিয়ে স্কুলে আসতে বলেন। কিছুক্ষনের মধ্যে প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগমের স্বামী আইয়ুব আলী ১০/১২ জন লোক নিয়ে এসে সহকারী শিক্ষকদের উপর চড়াও হন। প্রাণভয়ে সহকারী শিক্ষকরা একটি কক্ষে আশ্রয় নিলে বহিরাগত লোকজন ওই কক্ষের দরজা জানালায় লাথি মেরে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। এসময় শিক্ষার্থীরা ভয়ে চিৎকার করতে থাকে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে প্রধান শিক্ষককের স্বামী সহ বহিরাগতরা “আগামীকাল বিদ্যালয়ে আসলে মেরে পা ভেঙ্গে দেয়া হবে ” এই হুমকি দিয়ে চলে যায়।
সহকারী শিক্ষক তুলশী রানী ও সুমনা সরকার বলেন, প্রধান শিক্ষক সন্ত্রাসী লোক দিয়ে বিদ্যালয় আসা যাওয়ার পথে কিংবা বিদ্যালয় চলাকালীন আবারও আমাদের উপর হামলা করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সহকারী শিক্ষক ছমির উদ্দিন বলেন, ঘটনার বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারকে মৌখিকভাবে জানালে তিনি থানায় ও শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মোছাঃ খাদিজা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা শিক্ষকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমার স্বামী বা আমি কিছুই করিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকবর কবীর বলেন, ঘটনা শুনেছি, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।