ফরিদপুরে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার সাপের ছোবলে হোসেন ব্যাপারী (৫০) নামে কৃষকের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে বাড়ির পাশে ক্ষেতে ঘাস কাটার সময় সাপে ছোবল দেয় হোসেনকে। সাপের ছোবলে বিষদাঁতের টুকরো গেঁথে ছিলো তার পায়ে, তবে হাসপাতালের চিকিৎসায় ভরসা না পেয়ে গভীর রাতে ছুটে যান ওঝার বাড়িতে, এতেই কাল হয়েছে হোসেন ব্যাপারীর। তিনি ওই গ্রামের পরেশউল্লা ব্যাপারীর ছেলে।
অবশ্য পরে তাকে ট্রলারযোগে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
নিহত হোসেন ব্যাপারীর মামা সাবেক ওয়ার্ড মেম্বার হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমে জানান, হাসপাতালে নেয়ার পরে হোসেন সুস্থ ছিলেন। তাকে ইঞ্জেকশন ও স্যালাইন পুশ করা হয়। তার রক্তও পরীক্ষা করা হয়। তবে চিকিৎসকেরা জানান, তার রক্তে তখনও রাসেল ভাইপার সাপের বিষ ছড়িয়ে পরেনি। তাই তখনই তাকে অ্যান্টিভেনম দেয়ার সময় হয়নি বলে তারা জানান।
হেলাল আরো বলেন, হাসপাতালে তখন ইন্টার্নি চিকিৎসকরা ডিউটিতে ছিলেন। হোসেনের পরিবার তখন বড় ডাক্তারের খোঁজ জানতে চাইছিল। হাসপাতালে নেয়ার পরেই হোসেনের শরীরের বাঁধন খুলে দেয়া হয়। তারা বেশ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে চরভদ্রাসনের হাজিগঞ্জে এক ফকির বাড়িতে। তখনো হোসেন সুস্থ ছিল। কিন্তু ফকির বাড়িতে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পরে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাতে সে প্রস্রাব করার সময় প্রস্রাব দিয়ে রক্তও পড়ে। এরপর সকালে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। অবস্থার অবনতি হলে সকাল ৯টার দিকে তাকে আবার হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে তারপর তাকে আর চিকিৎসা দেয়ার কোনো পর্যায় ছিলো না। এরপর সকাল ১১টার দিকে মারা যান তিনি।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর জেলার চরাঞ্চলে হঠাৎ রাসেলস ভাইপারসহ বিভিন্ন বিষধর সাপের কাটা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতাল গুলোতে। চর এলাকার অধিকাংশ মানুষ তেমন সচেতন না থাকায় সাপে কাটা রোগীকে নিয়ে স্বজনরা ছুটছে ওঝার বাড়িতে। কেউবা হাসপাতালে আসছে অনেকটা সময় পেরিয়ে। ফলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৪:৩৫ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি