সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের মধ্য আমরবুনিয়া এলাকায় বনের মধ্যে লাগা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তিনদিন পর আগুন নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিলেন ফায়ার সার্ভিসের ডিজি অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাইজুল ইসলাম চৌধুরী।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ডিজি এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সুন্দরবনের আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে যেখানে আগুন দেখা যাবে, সেখানে পানি ছিটানো হবে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাইজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, বনে পাতার অনেক মোটা স্তর রয়েছে। এসব স্তরের নিচে নিচে আগুন থাকতে পারে, তাই, আরও দুই দিন পানি ছিটানো হবে।
গত শনিবার বিকেল ৪টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের মধ্য আমরবুনিয়া সুন্দরবনের অংশে স্থানীয় লোকজন আগুনের ধোয়া দেখতে পান। এরপর থেকে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড, কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরসি) সদস্যসহ স্থানীয় শত শত নারী ও পুরুষ আগুন নেভানোর কাজ করেছেন।
এ আগুনের বিষয়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী।
তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের আগুন পুরোপুরি নেভাতে লাগবে আরও দুই থেকে তিন দিন।
সিসিএফ বলেন, ‘সাত সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির প্রধান থাকবেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো। এ ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃত সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা থাকবেন। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তারা ওই প্রতিবেদন সুপারিশসহ জমা দেবেন।
‘তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে বনভূমির পাঁচ একর জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে সুন্দরবনের আগুন মানবসৃষ্ট ও পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। গতকাল সকালে আমরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির সামনে মানববন্ধন করেছে বাপা, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার।
এ সময় বক্তারা বলেন, মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বন কর্মকর্তার যোগসাজশে আগুন লাগানো হয়। এ ছাড়া অদক্ষ মৌয়ালদের কারণে বনে বারবার আগুন লাগছে। এর দায় বন বিভাগ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম