ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের উপরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা দলে দলে সে দেশের সুকুক বন্ড বিক্রি করে দেওয়ার কারণেই পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। এমনকি বৃদ্ধি পাচ্ছে দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কাও। বর্তমানে মালদ্বীপের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার কমেছে। মালদ্বীপের ব্যবহারযোগ্য ডলারের ভান্ডারও প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছে।
সুকুক বন্ড ইসলামিক বন্ড নামেও পরিচিত। শরিয়া মেনে তৈরি এই সরকারি বন্ড প্রচলিত মূলত ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোতে। গত এক দশকে বিশ্ব বাজারে সুকুকের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমেরিকার মুদ্রা ডলারের নিরিখে সুকুকের দাম সম্প্রতি ৭০ সেন্ট করে কমে গিয়েছে। যা আগামী দিনে আরও পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই আবহে মালদ্বীপ দেউলিয়া হতে পারে বলে আশঙ্কাও ছড়িয়েছে।
দেশটির জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী, মালদ্বীপের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ৩৯.৫ কোটি ডলার থাকা সত্ত্বেও ব্যবহারযোগ্য ভান্ডার মাত্র ৪৫ লাখ ডলারের। এখন আবার সুকুক বিক্রি করার ধুম বেড়ে যাওয়ায় নতুন বিপদে মুইজ্জু সরকার। ২০২৬ সালে সুকুকের যে ঋণপত্রগুলির মেয়াদপূর্তির কথা, তার জন্য ৫০ কোটি ডলার মেটাতে হবে সরকারকে। তবে এখন সুকুকের দাম কমায় অনেকেই আগেভাগে সুকুক বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে মুইজ্জু সরকারের উপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বড় পদক্ষেপ করে মালদ্বীপের শীর্ষব্যাংক ‘ব্যাংক অফ মালদ্বীপ (বিএমএল)’। বিএমএলের তরফে ব্যাংকের দেওয়া ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডগুলো থেকে বিদেশি লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্যবহারযোগ্য ডলারের ভান্ডার তলানিতে ঠেকেছে, এমন রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক দিন পর মালদ্বীপের মুদ্রা রুফিয়ার কার্ডের সঙ্গে ডলার লেনদেন বন্ধ করে দেয় বিএমএল। ক্রেডিট কার্ডের সীমাও কমিয়ে ১০০ ডলার করে দেওয়া হয়। এর পরেই দেশের জনগণের মধ্যে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় বিএমএল। এ বার আবার সুকুক বিক্রির ধুম লেগেছে মালদ্বীপে। তবে মুইজ্জু সরকারের যা হাঁড়ির হাল, তাতে যদি সরকার সকলকে টাকা মেটাতে যায়, তা হলে তারা দেউলিয়া হয়ে যাবে।
আজ ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শরৎকাল | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ভোর ৫:৫৯ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি