প্রায় ২ যুগের বেশি সময়ের জোটসঙ্গী বিএনপিকে ‘মাইনাস’ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনায় সংস্কারকে প্রাধান্য দিলেও তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এরইমধ্যে ১৫০টির বেশি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এসব প্রার্থীদেরকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আগামী নির্বাচনকে ঘিরে জামায়াতে ইসলামী দুই ধরনের প্রস্তুতি রেখে এগোচ্ছে। সেটি হচ্ছে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়া এবং নির্বাচনের সময় বিরাজমান পরিস্থিতির আলোকে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া। এই লক্ষ্যে এরইমধ্যে একাধিক ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটি। তাদের লক্ষ্য- ধর্মভিত্তিক এসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে বেশি আসনে জয়ী হয়ে আসা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে জামায়াতের দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রথমত, জামায়াত নিজেরাই ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের সময় যখন আসবে, তখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করবে, সেই পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেটি এককভাবে, নাকি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে, তা এখনই বলার সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনী জোট করার লক্ষ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জামায়াত ১৫ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন, ১২-দলীয় জোট, জাকের পার্টি, লেবার পার্টি, খেলাফত মজলিস ও ফরায়েজী আন্দোলনের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছে। এছাড়া খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আব্দুল মাজেদ আতাহারী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের (একাংশ) আমির আবু জাফর কাসেমী, জামিয়া মাদানিয়ার মুহতামিম মনিরুজ্জামান কাসেমী, জনসেবা আন্দোলনের আমির ফখরুল ইসলামসহ ব্যক্তিপর্যায়ে বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক ও আলেমদের সঙ্গে জামায়াতের আমির পৃথক মতবিনিময় করেছেন।
অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির নির্বাচনী জোট ছিল। আদর্শিক কোনো বিষয় ছিল না। তারা একসময় বিএনপির সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় ছিল। আরেক সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। তাদের দুই রূপই আমরা দেখেছি। এখন জামায়াতের রূপ যদি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মতো হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী জোট হতে পারে। সেটা না থাকলে একসঙ্গে আর নির্বাচন করা হবে না। তারা তাদের মতো চলবে। আমরা আমাদের মতো রাজনীতি করব।’
আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ৮:০৭ | রবিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি