চাল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি। গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
অভ্যন্তরীণ বাজারে সহজ প্রাপ্যতা ও দাম কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের খাদ্য ও ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। দ্রুতই কার্যকর করা হবে এই আদেশ। এতে করে বিশ্ব বাজারে চালের দাম আরও বাড়া শঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, চাল থেকে তৈরি ভাত বিশ্বের প্রধান খাদ্য। গত এক দশক ধরেই বিশ্ববাজারে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ ছাড়া করোনা অতিমারী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈরি আবহাওয়ায় চালের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
চাল রপ্তানি নিষিদ্ধের কথা জানিয়ে ভারতের খাদ্য ও ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, বাসমতি না এমন সাদা জাতের চাল রপ্তানি করা যাবে না, যা ভারতের মোট চাল উৎপাদনের চার ভাগের এক ভাগ। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাজারে সহজ প্রাপ্যতা ও দাম কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বে যত চাল রপ্তানি করা হয় তার ৪০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। দেশটির এমন পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববাজারে বহুলভাবে ব্যবহৃত খাদ্যটির দাম বাড়তে পারে বলে এক নোটে লেখেছেন ডেটা বিশ্লেষণ সংস্থা গো ইন্টিলিজেন্ট। সংস্থাটি নোটে লিখেছে, ভারতে এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তুরস্ক, সিরিয়া, পাকিস্তানসহ আফ্রিকার দেশগুলো। ইতোমধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে দেশগুলো।
ভারতের খাদ্য ও ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাজারে দেশটির সাদা জাতের চালের চাহিদা আগের বছরের একই সময়ের থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। এর জেরে গত সেপ্টেম্বরে ভাঙা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধের পাশাপাশি চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ অতিরিক্ত কর আরোপ করে ভারত সরকার।
আর্থিক সংস্থা রাবোব্যাংকের জ্যৈষ্ঠ বিশেষজ্ঞ অসকার তেজকারা বলেন, ‘গত বছর ভারত এক কোটি তিন লাখ টন চাল রপ্তানি করে। তবে, রপ্তানি করা সব চালই ছিল সাদা জাতের।’ এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘ভারতের শূন্যস্থান পূরণের সামর্থ্য নেই বিকল্প সরবরাহকারীদের কাছে। মূলত ভারতের চাল বেশি আমদানি করে থাইল্যান্ডম ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। এই শূন্যস্থান প্রতিস্থাপনের জন্য দেশগুলোর পর্যাপ্ত সরবরাহকারী নেই।’
চলতি বছরের মার্চে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। দেশটির সরকার খাদ্য নিরাপত্তা ও মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে এমনটি করছে। এর আগে গত বছর গম ও চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেশটি।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন