মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা মহসিন মিয়ার (মধু) বাড়িতে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই মেয়রসহ ৩৪ জনের নামোল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৫শে সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজার আদালতে ইউসুফ মিয়া এ মামলাটি দায়ের করেন। তিনি মেয়র মহসিন মিয়ার (মধু ) কর্মচারী বলে জানা গেছে।
মামলার বাদি ইউসুফ মিয়া জানান, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকার কারণে বিচার বিভাগ দলীয়করণ হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহারে তখন মামলা করা যায়নি।
মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হলেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক (৫৫), জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিসবাহুর রহমান (৬০), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফজলুর রহমান (৫০), জেলা যুবলীগ নেতা ও কমলগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জুয়েল আহমেদ (৪০), শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ আলী (৬০), জহর তরফদার (৪৮), উজ্জ্বল দাশ সুমন (৪৫), মৌভীবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন (৪৮), আকরামুল হক সোহাগ (৪৫), রোমান খাঁন (৪২), তানভীর আহমেদ নাঈম (২২), আব্দুল মতিন (৪৮), আশিকুর রহমান সাগর প্রকাশ স্টেপ সাগর (২৪), আইয়ুবুর রহমান আকাশ (২৮), দেলোয়ার হোসেন রাহিদ (৪৫), তামিম মিয়া (৪০), সাদিকুল ইসলাম (৩৫), এ এফ এম হিমেল (৪০), রাজু দেব রিটন (৩২), আকাশ দেব জুয়েল (২৮), আমিরুল ইসলাম চৌধুরী আমিন (৩৫), পাবেল মিয়া (৪২), কৌশিক ভট্টাচার্য্য (৪০), কাসুম মিয়া (৪২), পংকজ নাগ (৪৫), আজিজুল রহমান নাঈম (২৬), সুমেল চৌধুরী (৪০), উজ্জ্বল কান্তি দাশ (৩০), মোসাহিদ মিয়া (৩০), হারুনুর রশিদ (৫০), দ্বীপ সাগর (২৫), তাহের খান মুন্না (৩৫), আবুল মাসুম রনি (২৫), কায়েস আহমেদ (৩৫)।
মামলার সূত্রের বরাতে জানা যায়, গত ২০২১ সালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাচনে খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মহসিন মিয়া (মধু) বিশাল ভোট ব্যবধানে বিজয়ী হন। সে সময়ে মহসিন মিয়ার (মধু) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
তারা নির্বাচন প্রচার-প্রচারণা চলাকালীন সময়ে মহসিন মিয়ার কর্মী সমর্থককে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয়। এছাড়াও অভিযুক্ত আসামিরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহসিন মিয়ার বাসার গেইটের সামনের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বাসা ঘেরাও করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণসহ বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিয়ে গালাগাল করে। এ সময় স্বাক্ষীর বাসার ভিতরে ককটেল বিস্ফোরণসহ এলোপাতাড়ি ঢিল ছুড়ে অরাজকতা, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম এর উদ্দেশ্যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
মামলায় উল্লেখিত ২ নম্বর আসামি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ৩ নম্বর আসামি মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ও ৪ নম্বর আসামি কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র থাকা অবস্থায় এবং ৬ নম্বর ও ১২ নম্বর আসামি সরকারি কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করে ১ নম্বর আসামির পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাসহ ১ নম্বর সাক্ষীর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেয়।
৬ নম্বর এবং ১২ নম্বর আসামি সরকারি কর্মচারী হয়েও তারা দলীয় নৌকা প্রতীকের পক্ষে সকল সরকারি কর্মচারীদের ভয়-ভীতিসহ চাকুরি হারানোর হুমকি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি করে ও বহাল তবিয়তে কর্মরত আছেন।
আজ ২২শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৪:৩৭ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি