গত ৩০ নভেম্বর সবার জন্য উন্মুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনএআই’ উদ্ভাবিত ‘চ্যাটজিপিটি’। কিছু আকর্ষণীয় ফিচার রয়েছে চ্যাটজিপিটির। রচনা লেখা থেকে শুরু করে গানের লিরিক্স লেখা, গল্প লেখা, এমনকি কবিতা লিখতেও নির্দেশ দেয়া যাবে এই চ্যাটবটকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে শঙ্কায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে নিষিদ্ধ হয়েছে ‘চ্যাটজিপিটি’।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
গুগল, মাইক্রোসট, মেটা – একে একে সবাই চ্যাটবট তৈরিতে ব্যস্ত। এগুলোকে মানুষের জন্য আরও সুবিধাজনক এবং ব্যবহারোপযোগী করার জন্য গবেষণায় মত্ত টেক জায়ান্টগুলো। চ্যাটজিপিটি নামে একটি চ্যাটবট চালু করেছে ওপেনএআই। আপাতত পাবলিক টেস্টিংয়ের জন্য এটির ব্যবহার উন্মুক্ত করা হয়েছে। ওপেনআই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানি, যার একজন প্রতিষ্ঠাতা হলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যাটবট হলো চ্যাটজিপিটি। উন্মুক্ত করে দেওয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। খবর ডেইলি মেইল অনলাইন-এর।
চ্যাটবট কী?
চ্যাটবট হলো এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গঠন করা হয়। এটি একটি বড় ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল যাকে অসংখ্য ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়। ফলে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মতো করে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে; অর্থাৎ ম্যাসেজের রিপ্লাই দিতে পারে।
চ্যাটজিপিটি কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি-এর মতো টুল বাস্তবিক প্রয়োগে ব্যবহার করা যাবে যেমন, ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইন কন্টেন্ট তৈরি, কাস্টমার সার্ভিসের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ইত্যাদি। মানুষের কথা বলার ধরন অনুসরণ করে এই চ্যাটবটটি অসংখ্য প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে সক্ষম। ওপেনএআই কিন্তু পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে চ্যাটজিপিটি প্রদত্ত সকল উত্তর সঠিক হতে নাও পারে। চ্যাটজিপিটি কিন্তু ইন্টারনেট ব্রাউজ করে বা বাইরের কোনো সূত্র থেকে তথ্য খুঁজে আনেনা, বরং এটি শুধুমাত্র শেখানো বিষয়গুলো ব্যবহার করেই উত্তর প্রদান করে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে নিষিদ্ধ ‘চ্যাটজিপিটি’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মেধা বিকাশে বিঘ্ন ঘটাতে পারে- এমন শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সরকারি স্কুলে নিষিদ্ধ হলো ‘চ্যাটজিপিটি’। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনএআই’ গত ৩০ নভেম্বর উন্মোচন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সফটওয়্যার ‘চ্যাটজিপিটি’। এটি নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের সরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য ‘চ্যাটজিপিটি’ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ‘চ্যাটজিপিটি শিক্ষার্থীদের শেখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে’ উল্লেখ করে গত ৩ জানুয়ারি ‘নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সংস্থাটির বক্তব্য হচ্ছে, ‘শিক্ষার্থীদের শিখনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবটে ফলাফল হিসেবে দেখানো বিষয়বস্তুর নিরাপত্তা ও নির্ভুলতার বিষয়ে উদ্বেগের কারণে নিউইয়র্ক শহরের সরকারি স্কুলগুলোর নেটওয়ার্ক এবং ডিভাইসগুলোতে চ্যাটজিপিটি অ্যাক্সেস বাতিল করা হয়েছে। টুলটি প্রশ্নের দ্রুত এবং সহজ উত্তর দিতে সক্ষম হলেও এটি চিন্তা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে না।