এবারের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী নৌকা নিয়ে ডুবে গেছেন। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছেই পরাজিত হয়েছেন দলের ৩ প্রতিমন্ত্রীসহ ১৯ জন বর্তমান সংসদ সদস্য। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকে ভোটে দাঁড়ানো এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনেকে আওয়ামী লীগের মনোনীতদের বিরুদ্ধে সফল প্রচারনা চালান। যার ফলস্বরূপ ফল ঘোষণার পর নৌকা ডুবিয়ে তাদের জয় চমক হিসেবে এসেছে।
নির্বাচনে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন-আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য এনামুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী তিনবারের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য।
এছাড়া ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশাও নৌকা নিয়ে ডুবে গেছেন।
যেসব আসনে স্বতন্ত্রের কাছে নৌকার ভরাডুবি হলো-
যশোর-৫ঃ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য হেরে গেছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২ ভোট।
যশোর-৬ঃ এ আসনে নৌকা নিয়ে হেরেছেন শাহীন চাকলাদার, ভোট পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৬৯টি। জয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকে আজিজুল ইসলাম, ভোট পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৭টি।
রাজশাহী-২ঃ এ আসনে নৌকা প্রতীকের ১৪ দলের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন। প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯০৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছেন ৩১,৪৬৩ ভোট। এই আসনে ১৪ দলের প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা এর আগের টানা ৩ বারের সংসদ সদস্য।
কুষ্টিয়া-২ঃ এ আসনে ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হয়েছেন। ইনু পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা কামারুল আরেফিন ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ফরিদপুর-৩ঃ ফরিদপুর সদর আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট পেয়ে হেরে যান। এখানে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তিনি ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট।
ফরিদপুর-৪ঃ এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ এবারও হেরে গেছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট। ফলস্বরূপ এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা নিক্সন চৌধুরী ঈগল প্রতীকে তৃতীয়বারের মত জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট।
মাদারীপুর ৩ঃ এ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে হেরে গেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক আওয়ামী লীগ নেতা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মোসা. তাহমিনা বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট।
বরগুনা-১ঃ এ আসনে (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে হেরে গেছেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি নৌকা প্রতীকে ৫৪ হাজার ১৬৮ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়। এ আসনে জয় পেয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরোয়ার টুকু। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬১ হাজার ৮৭৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম সরোয়ার ফোরকান (স্বতন্ত্র) পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৮৭৪ ভোট।
ঢাকা-১৯ঃ এ আসনে নৌকার প্রার্থী ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। এ আসনে নৌকা তৃতীয় স্থান পেয়েছে। সাইফুল আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এখানে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সাবেক সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হেরে গেছেন। সাইফুল পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। আর নৌকা প্রতীকের এনামুর পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট।
মানিকগঞ্জ-২ঃ এ আসনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন তিনবারের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। এ আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। ঘোষিত ফল অনুযায়ী মোট ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রে টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট আর মমতাজ পেয়েছেন ৮২, হাজার ১৩৮ ভোট।
মুন্সীগঞ্জ-৩ঃ এ আসনে হেরেছেন নৌকার মৃণাল কান্তি দাশ; ভোট পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮৩৩টি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌরসভা মেয়র মোহাম্মদ ফয়সাল স্বতন্ত্র হিসেবে কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৭০৫টি।
গাজীপুর-৫ঃ এ আসনে নৌকার প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকিকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাকসুর সাবেক ভিপি আকতারুজ্জামান। ট্রাক প্রতীকের আখতারউজ্জামান পেয়েছেন পেয়েছেন ৬২ হাজার ৯৪০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৬ ভোট। ভোটের ব্যবধান ১২ হাজার ২৪৪।
নরসিংদী-৩ঃ এ আসনে নৌকা প্রতীকের ফজলে রাব্বি খান ৪৫ হাজার ১১৫ ভোট পেয়ে হেরে গেছেন। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা স্বতন্ত্র হিসেবে ভোট করে ঈগল প্রতীকে জয় পেয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৭৭৯ ভোট।
ময়মনসিংহ-১ঃ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) এ আসনে জুয়েল আরেং নৌকা প্রতীকে ৭৩ হাজার ৮৯২ ভোট পেয়ে হেরে গেছেন। তাকে হারিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল হক সায়েম, যিনি ট্রাক প্রতীকে ৯৩ হাজার ৫৩১ ভোট পেয়েছেন।
ময়মনসিংহ-৬ঃ এ আসনে (ফুলবাড়িয়া) মোসলেম উদ্দিন নৌকা প্রতীকে ভোট করেও হেরেছেন, পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৫৮ ভোট। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক সরকার ট্রাক প্রতীকে ৫২ হাজার ২৫৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
ময়মনসিংহ-৭ঃ এ আসনে (ত্রিশাল) হেরেছেন আওয়ামী লীগের হাফেজ রুহুল আমিন মাদানি। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৫৩১ ভোট। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম আনিসুজ্জামান আনিছ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীকে তাকে হারিয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৭১ হাজার ৭৩৮ ভোট।
ময়মনসিংহ-১১ঃ এ আসনে (ভালুকা) কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু নৌকা প্রতীকে ভোট করে হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। তিনি পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৪২০ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ ওয়াহেদ নৌকার ভরাডুবির কারণ হয়েছেন। তিনি ৯৫ হাজার ২৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
জামালপুর-৪ঃ এ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জামালপুর–৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এই আসনে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগেরই আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রশীদ।
টাঙ্গাইল-৮ঃ এ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়ের কাছে পরাজিত হয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। দুই উপজেলার মোট ১২৭টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে অনুপম শাহজাহান জয় পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গামছা প্রতীকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট। ফলে ২৮ হাজার ৯০০ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন কাদের সিদ্দিকী।
নেত্রকোণা-৩ঃ এ আসনে (কেন্দুয়া-আটপাড়া) নৌকার প্রার্থী অসীম কুমার উকিল হেরে গেছেন; তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৫০ ভোট। এ আসনে জয় পেয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। তিনি ভোট পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৮০৩টি।
কিশোরগঞ্জ-২ঃ এ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ প্রথমবার নৌকায় ভোট করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তিনি পেয়েছেন ৬৮,৬৯২ ভোট। এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন। ঈগল প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা পেয়েছেন ৮৯,৫৩৯ ভোট।
হবিগঞ্জ-৪ঃ এ আসনে নৌকার প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী হেরে গেছেন। টানা দুইবারের এই সংসদ সদস্য পেয়েছেন মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট। চমক দেখিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ ও যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন)। তিনি হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে হারিয়েছেন। সৈয়দ সায়েদুল হক পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ঃ এ (নাসিরনগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামান। আওয়ামী লীগ নেতা একরামুজ্জামান কলার ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৪২৪ ভোট। সংগ্রাম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৮৯ ভোট।
কুমিল্লা-২ঃ এ আসনে (হোমনা ও তিতাস) হেরেছেন সেলিমা আহমাদ। তাকে পরাজিত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল মজিদ। তিনি হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র্র ট্রাক প্রতীকের মো. আবদুল মজিদ ৪৪ হাজার ৪১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম নৌকা প্রতীকের সেলিমা আহমাদ পেয়েছেন ৪২ হাজার ৪৫৩ ভোট।
কুমিল্লা-৩ঃ এ আসনে (মুরাদনগর) হেরেছেন হেরেছেন ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। এখানে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র্র ঈগল প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম ৮৩ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন পেয়েছেন ৭২ হাজার ১৪ ভোট।
কুমিল্লা-৪ঃ এ আসনে (দেবীদ্বার) হেরেছেন রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এখানে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র্র ঈগল প্রতীকের মো. আবুল কালাম আজাদ ৯৬ হাজার ৮০৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের রাজী মোহাম্মদ ফখরুল পেয়েছেন ৮১ হাজার ২৫৭ ভোট।
কুমিল্লা-৫ঃ এ আসনে (বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) হেরেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসেম। এখানে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ জাহের। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। এ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কেটলি প্রতীকের এম এ জাহের ৬৫ হাজার ৮১০ পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ফুলকপি প্রতীকের সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫২২ ভোট।
চট্টগ্রাম-১৫ঃ এ আসনে (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) হেরেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। তাকে হারিয়ে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেব এ আসনে ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী নৌকা প্রতীক নিয়ে ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১৬ আসনে শেষ বেলায় আচরণিবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা হারালে নৌকার মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট বাতিল করা হয়। বাঁশখালীর এ আসনে জেলা আওয়ামী নেতা মুজিবুর রহমান ঈগল প্রতীকে ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আরেক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির। তিনি ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট। এবার ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দেন ১ লাখ ২৯ হাজার ২২৩ জন। এর মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৬৮টি ভোট, যা মোস্তাফিজুরের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার-১ঃ এ আসনের (চকরিয়া-পেকুয়া) বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ভোটে হেরেছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (হাতঘড়ি)। তার প্রাপ্ত ভোট ৮১ হাজার ৯৫৫। জাফর আলম (ট্রাক গাড়ি) এর প্রাপ্ত ভোট ৫২ হাজার ৯৮৬।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৩:২৭ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/এমআরবি