সারাদেশে মৌলভীবাজারের জাম্বুরার বেশ সুনাম রয়েছে। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় জাম্বুরার (বাতাবি লেবু) বাম্পার ফলন হয়েছে। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় জাম্বুরার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ার পাশাপাশি বাজারে ভালো দাম থাকায় খুশি চাষীরা।
‘ভিটা’মিন সি’ সমৃদ্ধ এই ফলটির বেশ কদর রয়েছে। পাহাড়ি এলাকার টিলাগুলোতে এর ফলন ভালো হয়। জুড়ী উপজেলায় জাম্বুরার বাণিজ্যিক কোনো বাগান না থাকলেও বাড়ির আশেপাশের বিস্তীর্ন ও পতিত এলাকার জমিতে জাম্বুরার চাষ হয়। কলম করে চারা রোপন করলে ২-৩ বছরের মধ্যেই ফলন পাওয়া যায়। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে প্রতি হেক্টরে ১৫-২০ টন ফলন পাওয়া সম্ভব। বীজের চারা থেকে ফলন আসতে ৫-৬ বছর সময় লেগে যায়।
উপজেলার হায়াছড়া, শুকনাছড়া, জামকান্দি, দুর্গাপুর, গোবিন্দপুর, বিনোদপুর, লালছড়া, রোপাছড়া, লাঠিটিলা, কুচাইরতল, কচুরগুল, কালাছড়া ও পুটিছড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের টিলাবাড়ি বা বসতবাড়ির আশপাশে ৬৬ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ হাজার জাম্বুরা গাছ রয়েছে। হায়াছড়া এলাকার কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, আমার ১০০টি জাম্বুরা গাছ রয়েছে। গতবছর প্রায় দেড় লাখ টাকার জাম্বুরা বিক্রি করতে পেরেছি। এ বছরও ভালো ফলন হয়েছে। পানির সেচের ব্যবস্থা থাকলে আরও বেশি জাম্বুরা উৎপাদন সম্ভব।
রোপাছড়া গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, আমাদের এখানে প্রচুর পরিমাণে জাম্বুরার ফলন হয়। স্থানীয় বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায় না। পাইকাররা আমাদের থেকে একেকটি জাম্বুরা ১০-১২ টাকা করে কিনে নেয়। আর বাজারে একেকটি জাম্বুরা ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করেন। জুড়ী বাজারে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আমরা চট্টগ্রাম, সিলেট ও ভৈরবে জাম্বুরা বিক্রি করতে নিয়ে যাই। সেখানে জাম্বুরার ভালো চাহিদা রয়েছে আর দামও ভালো পাওয়া যায়। চাষিদের থেকে পাইকারদের লাভ বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, জুড়ীর বাতাবি লেবু খুবই সুস্বাদু ও রসালো। সারাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় দুটি জাত জুড়ী-১, জুড়ী-২ কলমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মত এবারও ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি