নিংজিয়া ও গানসু অঞ্চলের শত শত মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে চীন। এমন খবরই প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) আজ বুধবার প্রকাশিত রিপোর্টে জানিয়েছে, চীনা কর্তৃপক্ষ দেশটির নিংজিয়া ও গানসু অঞ্চলে শত শত মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে বা সেইসব মসজিদে পরিবর্তন এনেছে। অঞ্চল দুইটিতে জিনজিয়াংয়ের পর সবচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করেন।
এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটিতে সংখ্যালঘুদের চীনাকরণ করার অংশ হিসেবে মসজিদগুলো বন্ধ করছে চীন সরকার। এইচআরডব্লিউ-এর গবেষকরা বলেছেন, ‘চীন সরকার স্বায়ত্তশাসিত নিংজিয়া অঞ্চল এবং গানসু প্রদেশে মসজিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে।
এদিকে স্যাটেলাইট ইমেজের ছবি পরীক্ষা করে এইচআরডব্লিউর গবেষকরা জানান, নিংজিয়ার দুটি গ্রামে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাতটি মসজিদের মিনার ও গম্বুজ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া চারটি মসজিদে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে মসজিদের তিনটি প্রধান ভবন ধ্বংস করা হয়েছে এবং একটির অজু করার স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব প্লাইমাউথের লেকচারার হান্নাহ থিয়েকার বলেন, ‘অজু করার ব্যবস্থা সরিয়ে দেওয়া মানে আপনি এটি নিশ্চিত করলেন এটি আর ব্যবহার করতে পারবেন না। এর মানে, হলো উপাসনার স্থান কার্যতভাবে অপসারণ করা হচ্ছে।’
হান্না থিয়েকার ও ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের গবেষক ডেভিড স্ট্রপের অনুমান, নিংজিয়ায় প্রায় এক হাজার ৩০০ মসজিদ নিবন্ধিত ছিল। ২০২০ সাল থেকে এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে এইচআরডব্লিউ ঠিক কত মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। তবে সরকারি প্রতিবেদন বলা হছে, এই সংখ্যা শত শত। নিংজিয়া প্রদেশের ঝোংওয়েই শহরের বাসিন্দা ১০ লাখের বেশি। ২০১৯ সালে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ২১৪টি মসজিদের স্থান পরিবর্তন করেছে, ৩৭টি নিষিদ্ধ করেছে ও ৫৮টি সংকুচিত করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সাল থেকেই ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) চীনে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর কঠোর চাপ বজায় রেখেছে। সে সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ধর্মকে চীনাকরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর থেকেই মসজিদের সংখ্যা হ্রাস বা তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। আর ২০১৮ সালের এপ্রিলে চীন সরকার ইসলামভিত্তিক ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ এবং বিন্যাস কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেয়। সেইসঙ্গে স্থাপনাগুলো বেশি ধ্বংস এবং কম নির্মাণের নীতি মেনে চলা শুরু করে।
খবরঃ দ্য গার্ডিয়ান।
আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সকাল ১০:৫১ | রবিবার
ডিবিএন/এসই/এমআরবি