ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় এক হামলার ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) দুই জওয়ান নিহত ও আরও দুইজন আহত হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার মধ্যরাতে জেলার নারানসিনা গ্রামের পাহাড় থেকে সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা নিচে সিআরপিএফের একটি ফাঁড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। ফাঁড়ির কাছাকাছি একটি বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় সিআরপিএফের চার জওয়ান গুরুতর আহত হয়।
আহতদের দ্রুত নিকটবর্তী চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলে সেখানে দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়।
পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মণিপুর সংকটের প্রথম বার্ষিকীর ছয় দিন আগে হামলার এ ঘটনাটি ঘটল, আসছে দিনগুলোতে হামলার ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
পিটিআইয়ের দেওয়া উদ্ধৃতিতে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘জঙ্গিরা পাহাড় থেকে ফাঁড়িটি লক্ষ্য করে নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে এটি শুরু হয়, চলে প্রায় সোয়া ২টা পর্যন্ত। জঙ্গিরা বোমাও নিক্ষেপ করে।’
ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের পর ওই সিআরপিএফের জওয়ানরা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের (আইআরবি) ফাঁড়িটিতে অবস্থান করছিল। আইআরবির এই ফাঁড়িটিতেই হামলা হয়।
২০২৩ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে নারানসিনা গ্রামে ও আশপাশে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সঙ্গে কুকি-জো সশস্ত্র গোষ্ঠীর ব্যাপক গুলির লড়াই শুরু হয়। উভয়পক্ষই নিজেদের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ বলে দাবি করে পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে থাকে।
এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
২০২৩ সালে যে লড়াই শুরু হয়েছিল মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে, বর্তমানে সেই লড়াই প্রধানত আধা সামরিক বাহিনী, সেনাবাহিনী ও কুকিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও নিয়মিত সংঘাত হচ্ছে, লাগাতার মৃত্যু হচ্ছে দুপক্ষেই।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম