আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিংবদন্তি শচীন টেনডুলকারের একটি বিশ্বরেকর্ড ভাঙলেন তার স্বদেশি বিরাট কোহলি। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ভারতের হয়ে কোহলি দ্রুততম ২৭ হাজার রানের মাইলফলকে পা রাখলেন। এদিকে বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫২ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেছে ভারত। ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলেছে রোহিত শর্মার দল। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
বৃষ্টির কারণে আড়াই দিন খেলা না হওয়ায় এই টেস্ট ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছে বলে ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। তবে ভারত ড্র চায় না, চায় ম্যাচের ফলাফল হোক। সেটার প্রমাণ হল প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল এবং রোহিত শর্মার ব্যাটিং তাণ্ডবে। তাদের ব্যাটে ৩ ওভারেই ৫১ রান তুলে ভারত। যেটি টেস্ট ইতিহাসেরই দ্রুততম দলীয় পঞ্চাশের রেকর্ড।
তবে এ্ররপর আর এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি মেহেদেী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে পিরে যান ১১ বলে ২৩ রান করা রোহিত শর্মা। তার বিদায়ে ভাঙল ৫৫ রানের জুটি।
রোহিত দ্রুত ফিরে গেলেও শুবমান গিলকে নিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে যেতে থাকেন যশস্বী জয়সওয়াল। তুলে নেন অর্ধশতক। ভারতের হয়ে টেস্টে দ্রুততম ফিফটির সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। ২৬ বলে ৪৮ রান করা ভারতীয় ওপেনার পরের বলে ২ রান নিলেই ঋষভ পান্তের ২৮ বলের রেকর্ড ভেঙে ফেললেন। তবে ওই ২ রান তুলতে আরও ৫ বল খেলতে হয়েছে তাকে। ভারতীয় রেকর্ড না হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্রুততম ফিফটি পেয়ে যান জয়সওয়াল।
ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছিল এই অবশেষে চা বিরতির আগে এই জুটিকে থামান হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান বিধ্বংসী হয়ে ওঠা যশস্বী জয়সওয়াল। আউট হওয়ার আগে করেন ৫১ বলে ৭২ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৭২ রানের জুটি।
যশস্বী জয়সওয়ালের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি। বিরাট ও শুবমান মিলে চা বিরতির আগের বাকি সময়টুকু নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন। এই জুটির ১১ রানে ভর করে ১৬ ওভারে ১৩৮ রান করে চা বিরতিতে যায় ভারত।
চা বিরতি থেকে ফিরেই শুবমান গিলকে ফেরান সাকিব। সাকিবের বলে লং অফে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান গিল। আউট হওয়ার আগে করেন ৩৬ বলে ৩৯ রান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে ব্যাট করতে নামার আগে কোহলির রান ছিল, ২৬,৯৬৫ রান। ৩৫ বলে ৪টি চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রানের ইনিংস খেলে টিম ইন্ডিয়ার সাবেক অধিনায়ক শচীনকে ছাড়িয়ে যান।
গিলের বিদায়ের পর ফিরে যেতে পারতেন কোহলিও। তবে তাকে রান আউট করানোর সুযোগ মিস করেন খালিদ আহমেদ। ঘটনা ইনিংসের ১৯তম ওভারে। খালেদের বল কিছুটা ঠেলে দিয়ে রান নেওয়ার লক্ষ্য ছিল কোহলির। অপর প্রান্ত থেকে প্রাথমিকভাবে পন্থ সাড়া দিলে এগিয়ে যান কোহলি। উইকেট ছেড়ে পুরোপুরি বেরিয়ে যান এই ব্যাটার। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত বদলে কোহলিকে নিষেধ করেন পান্ত। এমন দোটানার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কোহলি। উইকেটের মাঝে এসে রীতিমত থেমে যান। এই সুযোগে খালেদ দ্রুত দৌড়ে এসে বল হাতে তুলে নিলে আর ক্রিজে ফেরার চেষ্টাই করেননি কোহলি। তবে, অবিশ্বাস্যভাবে সেই বল হাত দিয়ে স্ট্যাম্পে না লাগিয়ে ছুঁড়ে মারেন খালেদ। যা স্ট্যাম্পের পাশ কাটিয়ে চলে যায়। যার ফলে জীবন পান কোহলি।
খালিদ ব্যর্থ গেলে গিলকে ফেরানোর পর আবারও ভারত শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব। এবার তার শিকার হন ঋষভ পান্ত। সাকিবের বলে লং অনে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন পান্ত। তার বিদায়ে ১৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত।
১৫৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। এই জুটিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২৩৩ রান টপকে লিড নেয় ভারত।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম