নীলফামারী জেলার চিলাহাটিতে বিভিন্ন এলাকায় উঁচু তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে এক সময় দেখা মিলতো বাবুই পাখির বাসা। কিন্তু এখন সারিবদ্ধ তালগাছের পাতায় ঝুলতে দেখা যায় না তাদের শৈল্পিক বাসা। বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, কীটনাশকের ব্যবহার, শিকারিদের দৌরাত্ম্য, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাবুই পাখি এখন বিলুপ্তির পথে।
সাধারণত বাবুই পাখি খড়, ঝাউ, তালপাতা ও কাশবনের লতাপাতা দিয়েই উঁচু তাল গাছ এবং খেজুর গাছে বাসা বাঁধে। বাবুই পাখি বাসা বানানোর জন্য খুবই পরিশ্রম করে থাকে। বাবুই প্রথমে ঠোঁট দিয়ে ঘাসের আস্তরণ সারায় এবং যত্ন করে পেট দিয়ে ঘষে অর্থাৎ পালিশ করে মসৃণ করে বাসা তৈরি করে।
সাধারণত উঁচু তালগাছে খড়-কুটো দিয়ে তৈরি বাসা দেখতে খুব সুন্দর, আকর্ষণীয় ও মজবুত যা প্রবল ঝড়েও ছিঁড়ে পড়ে না। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষকে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করতো।
কবি রজনী কান্ত সেনের ভাষায়-‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার ’পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি-ঝড়ে।’ চিরচেনা সেই বাবুই পাখি এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। নির্বিচারে তাল ও সুপারি গাছ কাটায় বসবাস উপযোগী পরিবেশ নেই। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার শৈল্পিক কারিগর ‘বাবুই পাখি’!
অথচ মাত্র ১৫-১৬ বছর আগেও গ্রামবাংলার সবখানে চোখে পড়তো চিরচেনা সেই পাখি। দেখা যেত সারিবদ্ধ তালগাছ অথবা সুপারি গাছের পাতায় কি সুন্দরভাবে ঝুলে আছে। এখন আর ঝুলতে দেখা যায় না, কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয় না গ্রামবাংলার জনপদ।
আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | বিকাল ৩:৪৯ | শুক্রবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি