সিএনজি আকারে ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনার প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগোচ্ছে। আগামীকাল রোববার (২১ মে) বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের চুক্তি হতে যাচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংকটকালে এটি আপদকালীন ব্যবস্থা হলেও টেকসই সমাধানে প্রয়োজন পাইপলাইনে ভোলাকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা।
জ্বালানি সম্ভাবনার অন্যতম স্থান দ্বীপজেলা ভোলা। ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিসিএফ) গ্যাসের সম্ভাব্য মজুত থাকলেও জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ভোলা বিচ্ছিন্ন থাকায়।
ভোলার গ্যাস সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে দীর্ঘদিন ধরে নীতিনির্ধারণী মহলে চলছে উপযুক্ত বিকল্পের সন্ধান। অবশেষে সিএনজি আকারে ঢাকায় আনা হচ্ছে ভোলার গ্যাস। রোববার এ বিষয়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জ্বালানি বিভাগের ১০ বছর মেয়াদি চুক্তি হওয়ার কথা।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
এরই মধ্যে জারি হওয়া পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রাথমিক অবস্থায় সিএনজি আকারে ভোলা থেকে আনা হবে দৈনিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস, পরবর্তীকালে উন্নীত হবে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে, যা সরবরাহ হবে জ্বালানি সংকটে ভোগা ঢাকার আশপাশের শিল্পকারখানায়। যদিও স্বাভাবিকের তুলনায় এ প্রক্রিয়ায় গ্যাসের দাম পড়বে ৫৮ শতাংশ বেশি। শিল্প গ্রাহকরা যেখানে পাইপলাইনের গ্যাস পাচ্ছেন ৩০ টাকা দরে, সেখানে সিএনজি আকারে আনা গ্যাসের জন্য গুনতে হবে ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) বলছে, আগামী দুই মাসের মধ্যেই শুরু হবে এ প্রক্রিয়ায় গ্যাস সরবরাহ।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার সময় সংবাদকে বলেন, এটা জোর করে দেয়ার বিষয় না। আমাদের চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও যে গ্রাহকরা স্বল্প চাপে ভুগছেন, সেখানে যদি তিনি সিএনজিটা একটু বেশি দামে নিয়ে উৎপাদনটা বহাল রাখতে পারেন, তাহলে আমার মনে হয় যে শেষে প্রতিষ্ঠান তার পণ্যের মূল্য দিয়ে এটা সমন্বয় করতে পারবে।
তবে সিএনজি আকারে গ্যাস সরবরাহকে আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। টেকসই সমাধানে পরামর্শ আসছে ভোলাকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার। একই সঙ্গে নিরাপত্তাগত ঝুঁকি এড়াতে সর্বোচ্চ নজরদারির তাগিদও দিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘এটা যৌক্তিক যে এখন কিছু নেই। তাই আমি যতটুকু পারি, সিএনজি নিয়ে আসলাম কয়েকটা কারখানাতে। কিন্তু এটা তো সমাধান দেবে না। কারণ সিএনজি দিয়ে অতি অল্প পরিমাণ গ্যাস আনা যাবে। আমাদের যেটা দরকার, সেটা হচ্ছে একটা পাইপলাইন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, ‘‘১ দশমিক ৭ টিসিএফ যদি পাওয়া যায়, তাহলে আমি বলব যে সেখানে বড় ধরনের মজুত আছে। সেক্ষেত্রে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আনাটা অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে বলে মনে করি। এ ছাড়া ২৫ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস ট্রাকে পরিবহন করাটা কোনো কৌতুক না, এটা বাস্তব।’’
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন