বর্তমান পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা পাসপোর্ট এর কোন তথ্য পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে নতুন আরেকটি পাসপোর্ট এর আবেদন করা ও নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করার প্রক্রিয়া হল পাসপোর্ট রিনিউ করা বা রি-ইস্যু। আর উভয় ক্ষেত্রেই নতুন পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার পর আগের পাসপোর্ট বাতিল করা হয় ও নতুনটি সচল হয়। আবেদন করে নতুন যে পাসপোর্ট দেয়া হয় তার নাম্বারও নতুন হবে কিন্তু আগের পাসপোর্ট এর নাম্বার নতুন পাসপোর্ট এ থাকবে। বর্তমান পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ৮ মাস থাকা অবস্থাতেই পাসপোর্ট রিনিউর আবেদন করতে পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। কারণ প্রায় সব দেশেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস না থাকলে ভিসা ও ইমিগ্রেশন এন্ট্রি দেয়া হয় না।
পাসপোর্ট রিনিউ করার ধাপসমুহঃ
নতুন পাসপোর্ট এর আবেদন করা ও রিনিউ আবেদন করার প্রসেস প্রায় একই রকম। তবে অল্প কিছু পার্থক্য আছে আর সংক্ষেপে পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মসহ প্রতিটি ধাপের বিস্তারিত নিচে দেয়া হলো-
১। পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা
২। আবেদন ফরম পূরণ করা
৩। পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু ফি জমা দেয়া
৪।আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া ও বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট সম্পন্ন করা
৫।পুলিশ ভেরিফিকেশন (ক্ষেত্র বিশেষে)
৬।পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করা
৭।পাসপোর্ট সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট রিনিউ করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করাঃ
পাসপোর্ট রিনিউ করতে যেসব কাগজপত্র লাগে তা সব নতুন পাসপোর্ট করার মতই। তবে যেহেতু রিনিউ আবেদনকারীদের আগের একটা পাসপোর্ট থাকে তাই অনেক পাসপোর্ট অফিসে কাগজের কিছু শিথিলতা থাকে। চলুন দেখে নেই পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে-
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ (নিম্নোক্ত বয়স অনুযায়ী)
- ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ
- ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ
- ২০ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) আবশ্যক
- পেশাগত প্রমাণ (যেমন ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি, জব হোল্ডার হলে জব আইডী, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, কৃষক হলে জমির খতিয়ান এসব)
- ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার, উকিল ও অন্যান্য পেশার লোকদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদ
- সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য NOC বা Government Order-সরকারি আদেশ (GO/জিও)
- নাগরিক সনদপত্র
- পাসপোর্টে স্বামী বা স্ত্রীর নাম নতুন যুক্ত করলে কাবিননামা
- আগে কোন পাসপোর্ট থেকে থাকলে সেগুলোর মুল কপি ও ডাটা পেইজের ফটোকপি
- ১৮ বছরের নিচের আবেদনকারীদের জন্য তাদের পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- ১৫ বছরের নিচের আবেদনকারীদের পিতা-মাতার পাসপোর্ট সাইজ ছবি অথবা বৈধ অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ৬ বছরের নিচের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও 3R সাইজের (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড) ম্যাট পেপারে ল্যাব প্রিন্ট রঙ্গিন ছবি
এছাড়াও ঢাকার পাসপোর্ট অফিসগুলোতে বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিল, ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র এসব লাগতে পারে।
পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম পূরণ করাঃ
পাসপোর্ট রি-ইস্যু ফরম পুরন করতে হবে অনলাইনে। আর পাসপোর্ট ফরম পুরন করার জন্য প্রথমেই এই লিঙ্কে https://www.epassport.gov.bd/onboarding গিয়ে বর্তমান ঠিকানার জেলা ও পুলিশ স্টেশন সিলেক্ট করে ইমেইল ও ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্টেশন করতে হবে। এরপর ধাপে ধাপে খুব সতর্কতার সাথে আবেদন ফরম পুরন করতে হবে। এখানে ফরম পুরন করার সময় এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবেঃ
- রিনিউ বা রি-ইস্যু করতে অবশ্যই NID/BRC+MRP+নতুন আবেদনের সব মৌলিক তথ্য হুবুহ এক হতে হবে। মৌলিক তথ্য বলতে আপনার পাসপোর্ট এর তথ্য পাতার দুই পাতার সব তথ্যই তবে শুধু ইমার্জেন্সি কন্টাক বাদে। যদি তথ্যে গরমিল থাকে তাহলে তথ্য সংশোধন করে আবেদন করতে হবে। নতুন পাসপোর্ট এর তথ্য NID/BRC অনুযায়ী হবে। MRP বা আগের পাসপোর্টে যাই থাকুক না কেন। তাই পরিবর্তন করতে আগে NID/BRC সংশোধন করতে হবে। তারপর এফিডেভিড করে আবেদন করতে হবে।
- ধরুন আগে MRP করার সময় অনেকেই NID তে MD থাকলেই পাসপোর্ট এ দিয়েছেন MOHAMMAD। এখন যারা রিনিউ করতে চাইবেন তাদের দুইটা অপশন আছে। একঃ NID সংশোধন করে MD এর জায়গায় MOHAMMAD করে নেয়া। অথবা রিনিউ আবেদনে MD দিয়ে আবেদন করা। এতে পাসপোর্ট পেতে কয়েকমাস সময় লাগবে যদিও।
- বয়স, বাবা মায়ের নামের বানান বা নাম পরিবর্তন সব ধরনের পরবর্তনেই এখন এফিডেভিড ও অন্যান্য সাপোর্টিং ডকুমেন্টস দিয়ে আবেদন করতে হবে।
- কোন পরিবর্তন না থাকলে নতুন আবেদন ফরম খুবই সতর্কতার সাথে আগের পাসপোর্টের মত হুবুহ তথ্য দিয়ে পুরন করুন।
- পুর্ন নাম ও Given name ও Surname আগের পাসপোর্ট অনুযায়ী অথবা সংসোধন যেভাবে করতে চান সেভাবে দিন।
- কোন অবস্থাতেই কোন নামে ডট (.), কমা (,), হাইফেন (-) দিবেন না। আপনার সার্টিফিকেট, NID বা জন্ম নিবন্ধন যেখানেই থাকুক না কেন। এটা না দিলে কোন সমস্যা হবে না। দিলেই বরং অনাকাংখিত ঝামেলা হতে পারে।
- স্থায়ী ঠিকানা আগের পাসপোর্ট অনুযায়ী দিন। অথবা চেঞ্জ করতে চাইলে নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে।
- বর্তমান ঠিকনা আগে যেটা দিয়েছেন সেটা থাকলে দিন অথবা পরিবর্তন হলে নতুনটা দিন। ঠিকানা পুরনের সময় পূর্নাংগ ঠিকানা দিন। শহরের হোল্ডীং সহ ঠিকানা হলে City/Village/House ও Road/Block/Sector (optional) এই দুইটা ফিল্ডই ব্যবহার করুন। গ্রামে হলে শুধু City/Village/House এ গ্রামের নাম দিলেই হয়, Road/Block/Sector (optional) যেহেতু থাকে না তাই এটা অপশনাল।
- ID Documents সেকশনে অবশ্যই আগের পাসপোর্ট এর তথ্য দিবেন।
- “Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP)” সিলেক্ট করবেন।
- “Select reissue reason” এ সঠিক কারণ দিবেন। যেমন মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা মেয়াদের কাছাকাছি চলে আসলে EXPIRED দিবেন। MRP পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকা সত্যেও সখন করে ই-পাসপোর্ট করতে চাইলে দিবেন ‘Conversion to E-passport’. এছাড়া হারিয়ে গেলে Lost/Stolen আর অন্যান্য ক্ষেত্রে বাকিগুলা দেখে দিবেন।
- “Previous passport number” এ আগের পাসপোর্ট নাম্বার দিবেন। একাধিক পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে সর্বশেষটার নাম্বার দিবেন।
- “Select date of issue” এ আগের পাসপোর্টটি দেখে ইস্যু তারিখ দিবেন।
- “Select date of expiration” এ আগের পাসপোর্টটি দেখে মেয়াদ শেষের তারিখ দিবেন।
- “Do you have passports of other countries?” এ আপনার অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট থাকলে Yes দিয়ে সেটার তথ্য দিতে হবে। আমাদের না থাকলে শুধু No দিলেই হবে।
- এখন ID Documents সেকশনে ‘Identification information’ এ সতর্কথার সাথে আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধনের নাম্বার দিবেন (যেটা দিয়ে আবেদন করবেন)।
- Parental information এ বাবা মায়ের নাম দিবেন। তাদের National ID নাম্বার না দিলেও সমস্যা নাই।
- Guardian information শুধু যাদের দরকার তাদের দিবেন। এতা শুধু তাদের জন্য যাদের লিগ্যাল গার্ডিয়ান আছে। বাকিরা এটাতে কিছুই পুরন করবেন না।
- Spouse Information এ ম্যারিড দিলে কাবিননামা দিতে হবে ও স্পাউজ এর নাম ও অন্যান্য তথ্য দিতে হবে। আগের পাসপোর্ট এ স্পাউজ নাম থাকলে নতুন করে আর কাবিননামা দিতে হয় না।
- Emergency contact আপনি চাইলে পরিবর্তন করতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না।
- Passport options এ আপনি আবেদনের ধরন ও পৃষ্ঠা সংখ্যা সিলেক্ট করবেন ও সে অনুযায়ী পাস্পোর্ট ফি দেখাবে।
- Delivery Options & Appointment এ আপনাকে দেখাবে, আপনি যে কেন্দ্রে আবেদন করবেন সেখানে কোন এপয়েনমেন্ট লাগে কিনা। সাধারণত ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে এপয়েনমেন্ট লাগে না। আর ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে এপয়েনমেন্ট লাগে। এখন নিয়মিত আবেদনে ২ মাসের মাঝেও ডেট পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জরুরি সিলেক্ট করে দেখুন আগে পান কিনা। তাও না পেলে ও আপনার দ্রুত লাগলে জরুরি বা Express আবেদন সিলেক্ট করে আবেদন সাবিমিট করুন আর ব্যাংকে অতিব জরুরি/Super Express ফি প্রদান করুন। এতে আপনি কোন এপয়েনমেন্ট ছাড়াই যেকোনদিন আবেদন জমা দিতে পারবেন।
- শেষ ধাপে আপনাকে একটা সামারি দেখাবে যে আপনি আবেদন চেক করে দেখুন কোন ভুল আছে কিনা। সব কয়েকবার চেক করে দেখুন ঠিক আছে কিনা। সব ঠিক থাকলে সাবমিট করে দিন। একবার সাবমিট করলে আপনি আর এডিট করতে পারবেন না।
- এখন আপনি সামারি প্রিন্ট করতে পারবেন ও ফর্ম ডাউনলোড করতে পারেন।
- সবশেষে এপ্লিকেশন ফরমের শেষ পাতায় আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ দিন
- আবেদন খুব সতর্কতার সাথে পুরন করতে হবে। কারণ একটু ভুল হলেই বলবে আবেদন ক্যানসেল করতে। আর আপনি নিজে নিজে সাইট থেকে আবেদন ক্যানসেল করতে পারবেন না। এর জন্য অফিসে আবেদন করলে কিছুদিন পর আবেদন ডিলিট হবে। তা হয়রানি এড়াতে সতর্কতার সাথে ফরম পুরন করুন।
- একটা NID বা BRC দিয়ে একবার আবেদন সাবমিট করে ফেললে সেটা ডিলিট না হওয়া পর্যন্ত ওই NID বা BRC দিয়ে আর আবেদন করতে পারবেন না।
- কোন তথ্য সংশোধন করতে হলে এফিডেভিট ও সংশোধন আবেদন করতে হবে। তারপরেও কয়েকমাস Backend verification এ আটকে থাকবে। আপনাকে বার বার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তাগাদা দিতে হবে।
পাসপোর্ট রিনিউ ফি ও আবেদনের ধরনঃ
নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন এর ফি আর পাসপোর্ট রিনিউ ফি, রি-ইস্যু ফি একই। তবে আবেদনের ধরন ও পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট রিনিউ ফি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিচের টেবিলে দেখে নিন পাসপোর্ট নবায়ন ফি ২০২২।
পৃষ্ঠা সংখ্যা | মেয়াদ | নিয়মিত (২১দিন) | জরুরি (৭ দিন) | অতিব জরুরি (২ দিন) |
৪৮ পৃষ্ঠা | ৫ বছর | ৪০২৫ | ৬৩২৫ | ৮৬২৫ |
৪৮ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ৫৭৫০ | ৮০৫০ | ১০৩৫০ |
৬৪ পৃষ্ঠা | ৫ বছর | ৬৩২৫ | ৮৬২৫ | ১২০৭৫ |
৬৪ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ৮০৫০ | ১০৩৫০ | ১৩৮০০ |
তবে ১৮ বছরের কম বয়সী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট পাবেন।
পাসপোর্ট রিনিউ ফি জমা দেওয়ার নিয়ম-
ফরম পুরন করার পর দুই উপায়ে পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি জমা দেয়া যায়।
ব্যাংকে রি-ইস্যু ফি জমা দেয়া: আশেপাশে প্রায় অব ব্যাংকেই এ চলানের মাধ্যমে পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়া যায়। তবে সব ব্যাংক নাও নিতে পারে। তাই আগে জেনে নিতে হবে সুবিধাজনক কোন ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা নেয়। তারপর নিচের ডকুমেন্টস নিয়ে ফি জমা দিতে হবে।
- NID বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (যেটা দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করা হয়েছে
- এপ্লিকেশন সামারি পেইজ
- আর ব্যাংকে একটা ফর্ম দিবে পুরন করতে হবে
এ-চালানের মাধ্যমে নিজে জমা দেয়া: এছাড়া রকেট, বিকাশ, ডিবিবিএল নেক্সাস বা অন্যান্য ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টার্কার্ড দিয়ে অনলাইনে ও এ-চালানের এপে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়া যায়।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দিতে https://ibas.finance.gov.bd/acs/general/sales এই লিংক গিয়ে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করে আবেদনের প্রকৃতি ও বিতরণের প্রকৃতি সিলেক্ট করে পছন্দমত ব্যাংকের গেটওয়ে সিলেক্ট করে ফি দিতে হয়। এই সাইটে ফি দিতে কোন রেজিস্ট্রেশন এর দরকার নাই।
একই ভাবে A-Challan এর মোবাইল এপের মাধ্যমেও ফি দেয়া সম্ভব। এপ ডাউনলোড করতে হবে এন্ড্রয়েড ও আইওএস। এপে রেজিস্ট্রেশন করে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করে NID নাম্বার দিলে অটো নাম ও ঠিকানা সার্ভার থেকে চলে আসবে ও শেষের দিকে পেমেন্ট অপশন থাকবে।
দুইভাবেই পেমেন্ট সম্পন্ন হলে চালান ডাউনলোড করা যাবে। চালান ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে। চালান চাইলে ভেরিফাই করে রাখা যাবে এই সাইট থেকে।
সতর্কতাঃ
- পাসপোর্ট আবেদনকারীর নাম ও চালানের নাম একই দিতে হবে। আর তা না হলে আবেদন নিবে না।
- চালানে ডট (.) থাকা বা না থাকায় কোন সমস্যা হবে না।
- এ চালানে পেমেন্ট ফেইল হতে পারে। মানে টাকা কাটবে কিন্তু চালান আসবে না এমন হতে পারে।
আবেদন পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া ও বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট সম্পন্ন করাঃ
পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার আগে কাগজগুলো চেক করে নিতে হবে-
- চালান কপি (পেমেন্ট স্লিপ)
- এপ্লিকেশন সামারি এপয়েনমেন্টসহ (যদি লাগে)
- এপ্লিকেশন ফরম (৩ পৃষ্ঠা)
- NID বা জন্ম নিবন্ধরের ফটোকপি (আসলটাও দেখাতে হবে)
- পেশাগত প্রমাণ (স্টুডেন্ট আইডি, জব আইডী, ট্রেড লাইসেন্স, NOC, GO ইত্যাদি)
- কাবিননামা (যদি লাগে)
- নাগরিক সনদপত্র
- ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি
- পুর্ববর্তী পাসপোর্ট এর ফটোকপি
ফরম পুরন করে পাসপোর্ট পেমেন্ট করে নিমোক্ত কাগজপত্র নিয়ে এপয়েনমেন্ট ডেটে পাসপোর্ট অফিসে চলে যেতে হবে। সিরিয়াল ধরে কাগজ জমা দিতে হবে কাউন্টারে। সব কিছু ঠিক থাকলে তারা আবেদন জমা নিবে এবং কোন রুমে যেতে হবে সেটা বলে দিবে। রুম নাম্বার অনুযারি পাঠানো রুমে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ, ছবি তোলা, চোখের স্ক্যান এবং সিগনেচার দিয়ে একটা রশীদ দিবে সেটা নিয়ে ভালো করে দেখতে হবে কোন ইনফরমেশনে ভূল আছে কি না। এই রশীদে যে ইনফরমেশন দেখাবে তা পাসপোর্টে হুবুহু সেইম ই প্রিন্ট হবে। তাই কিছু ভূল দেখতে পেলে সাথে সাথে কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। য়ার তা না হলে পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে গেলে আর সংশোধন করা যাবে না।
পুলিশ ভেরিফিকেশনঃ
পাসপোর্ট রি-ইস্যু বা রিনিউ আবেদনে সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশন হয় না। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে পারে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে।
- যদি স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়
- এছাড়া যদি কোন বিশেষ পরিবর্তন করা হয় তাহলেও পাসপোর্ট অফিস চাইলে পুলিশ ভেরিফিকেশন চাইতে পারে।
পাসপোর্ট রি-ইস্যু আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করাঃ
এবার পাসপোর্ট পাওয়ার ম্যাসেজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর অনলাইনে মাঝে মাঝে ঢুকে পাসপোর্ট এখন কোন অবস্থায় আছে চেক করতে হবে। এই লিঙ্কে গিয়ে https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status Application ID ( পাসপোর্ট এর ছবি তোলার পরে যে রশীদ দেবে সেখানে লেখা থাকবে ) অথবা Online Registration ID (ফরমে বা সামারি পেইজে আছে) এবং জন্ম তারিখ দিয়ে ক্যাপচার ভেরিভাই করতে হবে। তাহলেই পাসপোর্ট এর স্ট্যাটাস দেখতে পারা যাবে। আর নিজে একাউন্ট খুলে এপ্লাই করতে চাইলে একাউন্টে লগিন করেও স্ট্যাটাস দেখা যাবে। এছাড়া এসএমএস করেও স্ট্যাটাস চেক করা যাবে। EPP স্পেস Application ID লিখে ২৬৯৬৯ নাম্বারে মেসেজ করতে হবে। ফিরতি মেসেজে পাসপোর্ট এর বর্তমান অবস্থার আপডেট পাওয়া যাবে।
পাসপোর্ট সংগ্রহ করাঃ
সব কিছু ঠিক ঠাক মত হয়ে গেলে আবেদনের ধরনের উপর ভিত্তি করে কিছুদিন পর মোবাইলে ও ইমেইলে মেসেজ আসবে যে পাসপোর্ট কালেকশনের জন্য রেডি। মেসেজ পাওয়ার পর ডেলিভারি স্লিপ, আইডি কার্ড ও আগের পাসপোর্টগুলো নিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা যাবে।