দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন নিয়োগের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিভাগ ও জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কঠোর বার্তা দেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আপনারা এমন কিছু নিয়মনীতি গড়ে তুলেছেন যেগুলোর কারণে আপনাদের বিরুদ্ধে হাতও দেওয়া যায় না। আমরা কিন্তু ওসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করব না। নিয়মনীতি মেনে কিন্তু বাংলাদেশে অভ্যুত্থান হয়নি; সরকার পরিচালনাও কিন্তু নিয়মনীতি মেনে হবে না, যদি আপনারা সহযোগিতা না করেন।
তিনি বলেন, টাস্কফোর্স বা ভোক্তা অধিকার- আপনারা কয়টা অভিযান পরিচালনা করেছেন, কী পরিমাণ কাজ করেছেন সে বিষয়ে আমি কিছুই পাইনি। আমাকে বাণিজ্য সচিব তিনদিনের টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। আমি সেই প্রতিবেদনে একদিন চট্টগ্রামের নাম পেয়েছি, বাকি দুইদিন আপনাদের নামই নেই।
তিনি আরো বলেন, ৪০-৪৫টা জেলার মধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযান চলেছে। কিন্তু চট্টগ্রামে তিন দিনের মধ্যে দুইদিনই আসলে কোনো অভিযান হয়নি। আমার মনে হয়- এই জায়গায় আপনাদের সদিচ্ছার ঘাটতি আছে কিংবা সরকারের প্রতি অসহযোগিতার একটা ব্যাপার আছে।
উপদেষ্টা বলেন, এখনো আপনাদের অসহযোগিতার কারণে যে স্থবিরতা আছে এটার জন্য গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত আমাদের সর্বশেষ ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের হয়তো অনেক কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। একটা বিপ্লবের পরে কোনো কিছুই আর কাঠামোগতভাবে চলে না। আমরা সিস্টেমটা এখনো বজায় রেখেছি এবং আমরা প্রত্যাশা করি- আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। যদি সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন পড়ে, আমরা সিস্টেম ভাঙবো। প্রয়োজনে নতুন নিয়োগ দিয়ে এই জায়গা গুলোতে নতুন লোকদের বসাবো।
এ সময় সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকার পরও যদি আপনারা করতে না পারেন, তাহলে নতুনদের আমরা নিয়ে আসি। আপনাদের রেখে আমরা কী করবো?
দ্রব্যমূল্য নিয়ে আপনারা বলছেন- ভোক্তা অধিকারের আইন কঠোর না, কিন্তু আমাদের তো বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকের বিধান আছে। তাহলে সিন্ডিকেটে যারা আছে, তাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে নিয়ে আসতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরসহ কয়েকটি দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
এর আগে, উপদেষ্টা সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ও এম আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। এ সময় মাঠ ও স্টেডিয়ামের বেহাল অবস্থায় হতাশা জানান তিনি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও প্রদান করেন তিনি।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম