রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী খারুভাজ বিলে পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই পার্কের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এতে ওই এলাকার বিনোদন প্রিয় মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে।
এ পার্কের নাম দেওয়া হয়েছে খারুভাজ উপজেলা প্রশাসন পার্ক। পার্ক নির্মাণের নান্দনিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা পার্ক নির্মাণের এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আর এতে সহোযোগিতা করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, গজঘণ্টা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ও স্থানীয় লোকজন।
গত ১৫ জুলাই সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. চিত্রলেখা নাজনীন পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, নদীবেষ্টিত গঙ্গাচড়া উপজেলার মানুষের জন্য বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না।এখানকার মানুষ বিনোদনের জন্য শহরে ছুটে যেতেন। এখন এখানে পার্ক হলে যেমন অনেকের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হবে তেমনি সুস্থ মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে এই বিনোদন পার্ক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বকুল মিয়া বলেন, সরকারী জমি জবর দখলকারীরা এই পার্ক তৈরির বিরোধীতা করে নানা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত না হয়ে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। আমাদের এলাকায় বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
খারুভাজ বিল মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মুকুল মিয়া বলেন, ‘এলাকার মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য পার্ক জরুরি। এখানে পার্ক হচ্ছে এটা শুনে আমরা খুবই আনন্দিত। পার্ক হলে আমরা সন্তান, স্বজন ও পরিবারবর্গ নিয়ে সুস্থ্য বিনোদন ও সময় কাটানোর ভাল সুযোগ পাবো। দ্রুত পার্কের কাজ শেষ করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, ‘আমি গঙ্গাচড়ায় যোগদানের পর দেখলাম উপজেলায় মানুষের বিনোদনের জন্য কোনো পার্ক নেই। এই বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের পরামর্শে গজঘণ্টা ইউনিয়নের খারুভাজ বিল এলাকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পার্কটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, প্রায় ১৮ একর সরকারি জমিতে রয়েছে বিল। যা খারুভাজ বিল নামে পরিচিত। ওই বিল সরকার মৎস্য চাষের জন্য মৎস্য জীবীদের লিজ দেয়। সম্প্রতি বিলের কিছু জায়গা দখলকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। গঙ্গাচড়ায় কোনো বিনোদন পার্ক না থাকায় বিলটিতে মাছ চাষের পাশাপাশি একটি বিনোদন পার্ক তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি