‘Business America magazine’ বিশ্বব্যাপি একটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন যেটি প্রতিবছর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সফল বাংলাদেশীদের মধ্যে সবচেয়ে সফলতম ব্যাক্তিদের তালিকা প্রকাশ করে। এবার সেই তালিকায় স্থান করে নিলেন চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ হোসেইন (হাসান) । ম্যাগাজিনে তাঁর সম্পর্কে উল্লেখ করেন ঃ-
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক মোহাম্মদ হাসান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অন্যতম দেশ কানাডার ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। প্রতিভা, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের দ্বারা আজ তিনি এই অবস্থানে। মোহাম্মদ হাসান কানাডায় বাংলাদেশ কমিউনিটির একজন সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব। তিনি কানাডার ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইনক’ এর পরিচালক এবং প্রেসিডেন্ট। ২০০৪ সালে শুরু হওয়া এই কোম্পানি এখন সাফল্যের চুড়ায় প্রতিষ্ঠিত । এরপর তিনি ২০০৯ সালে ‘কানাডা ন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। যার পরিচালক এবং প্রেসিডেন্টও তিনি, যেটি কানাডিয়ান নির্মাণ খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে । বহুমাত্রিক বাণিজ্য ও ব্যবসায় জড়িত মোহাম্মদ হাসান ডিজিটাল বাংলা নিউজের চেয়ারম্যান। এর সাথে তিনি আরিস্তা গ্রূপ লিমিটেডেরও চেয়ারম্যান।
মোহাম্মদ হাসান বিশ্বাস করেন, কোনও ব্যক্তি কখনো আলাদিনের প্রদীপের মাধ্যমে নয় বরং সততা, নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তিনি আরও বিশ্বাস করেন যে, লক্ষ্যে পৌঁছানোর ইচ্ছা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করলে অবশ্যই সাফল্য আসবে। সময়ের সাথে সাথে তিনি এখন কানাডার ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি আলোকিত ব্যক্তিত্ব। স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী এই মানুষটি কানাডা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা মোহাম্মদ হাসান ১৯৬৪ সালের ১ লা এপ্রিল চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক অভিজাত সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ছিলেন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময়কার থ্রি জোন কমান্ডার এবং তাঁর বড় ভাই মরহুম আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ছিলেন বিএলএফ কম্যান্ডার, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।মোঃ হাসান মোট ৩ ভাই ও ৫ বোন মধ্যে সর্ব কনিস্টজন। তাঁর প্রয়াত মা মোমিনা খাতুন সন্তানদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস অত্যন্ত মানবেতর ও পলায়নপর জীবন যাপন করেছেন যখন তার বাবা এবং ভাই মুক্তিযুদ্ধে সশস্র যুদ্ধরত ছিলেন। মোহাম্মদ হাসান ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
কানাডায় একজন উদ্যোক্তা হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করার আগে তিনি ১৯৮৯ সালে এরশাদ শাসনামলে জেল, জুলুম ও অত্যাচারের অতিস্ট হয়ে দুবাই চলে যান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৯৮৯-২০০০ সাল পর্যন্ত নেসলে ডিএইচএল-এর মার্কেটিং ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০০ সালে কানাডায় আসেন এবং জুন, ২০০০ থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৩ অবধি এডিটি সিকিউরিটি সার্ভিসেস, অন্টারিও, কানাডার রিজিওনাল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি নিজেকে নিজের ব্যবসায়ের প্রতি নিবেদিত করেন এবং সাফল্যের মুখ দেখেন। অতঃপর নিজেকে কানাডার শীর্ষ ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বর্তমানে কানাডার বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের পরিচালক (অ্যাডমিন), বাংলাদেশ সোসাইটি কানাডা’র সভাপতি এবং কানাডার গ্রেটার চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।
এমনকি ছাত্রজীবনেও মোহাম্মদ হাসান বেশ মেধাবী, কঠোর পরিশ্রমী এবং একজন ভালো সংগঠক ছিলেন। তিনি ১৯৮০ সালে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে এসএসসি এবং ১৯৮২ সালে একই বোর্ড থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। ১৯৮৪ সালে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ১৯৮৬ সালে তিনি একই কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে।মোহাম্মদ হাসান একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ পেশাদার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিপণন ও বিক্রয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তিনি মাইক্রোসফ্টে কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ইন্টারনেট এবং ইমেল কার্যক্রমে দক্ষতার কারণে তিনি খুব দ্রুত ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে কানাডার আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ফলস্বরূপ দেশ আজ উন্নয়নের সিঁড়িতে চলমান। দুর্নীতি রোধের ইস্যুতে মোহাম্মদ হাসান বলেছেন । দুর্নীতির কারণে সরকারের বিগত অনেক সাফল্য নষ্ট হয়ে গেছে । বর্তমান সরকার দুর্নীতি নির্মুলের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে যদিও কিছু দুর্বৃত্ত রাজনীতিবিদ এবং দুর্নীতিবাজ আমলার কারনে এর বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে । তবে আশা করা যায় শেখ হাসিনার সততা ও গতিশীল নেতৃত্বে দুর্নীতি নির্মুলে সাফল্য আসবে ।
স্বপ্নদ্রষ্টা ও পরিশ্রমী মানুষ মোহাম্মদ হাসান বলেছেন, “আমরা যারা বিদেশে ব্যবসা করি এবং চাকরি করি, দেশের প্রতি তাদের ভালবাসা অগাধ।” আমরা সবসময় কেবল নিজের জন্য নয়, দেশের জন্যও কাজ করি। প্রবাসীরা তাদের আয়ের একটি বড় অংশ রেমিটেন্স আকারে পাঠান যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার এই রেমিট্যান্সগুলি পর্যালোচনা করছে এবং প্রবাসীদের সিআইপি মর্যাদায় পুরস্কৃত করছে এবং তার ইতিবাচক ফল রেমিটেন্সের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
মোহাম্মদ হাসান ফোবানা’র সাথে সম্পৃক্ত। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটি অপ কানাডার সভাপতি। উদার মনের অধিকারী মোহাম্মদ হাসান রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও দেশের মানুষের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। তিনি কানাডা ও বাংলাদেশের অসচ্চল মানুষদের পাশাপাশি দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্যও করে থাকেন। তিনি প্রতি বছর নিজস্ব অর্থায়নে কানাডার ৩০০০ এবং বাংলাদেশের ১০০০০ লোকের জন্য মেজবানির আয়োজন করে থাকেন।গণমাধ্যমকর্মীরা মোহাম্মদ হাসানের কাছে জানতে চেয়েছিলো কোন উদ্দেশে তিনি প্রতি বছর এত লোকদের দাওয়াত করে খাওয়ান? এর উত্তরে বলেন, তিনি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষদের ভালোবাসেন। তিনি নিজের দেশের লোকদের মধ্যে ঐক্য আনতে চান এবং তাদের আনন্দ দিতে চান।
মোহাম্মদ হাসান বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন সত্যি হতে দেখতে চান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের হাতকে শক্তশালী করতে চান। তিনি মনে করেন, “দেশপ্রেমিকদের ঐক্য বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করবে।”