ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের চাকরি নিয়েছিলেন যোগিন্দর কুমার, শেষ পর্যন্ত হয়েছিলেন অধ্যক্ষও। চাকরির ২৬ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ে হন চাকুরিচ্যুত। এবার তাকে চাকরি জীবনে প্রাপ্ত বেতনের পুরো টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমন নির্দেশনার পর পালিয়েছেন সেই শিক্ষক।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের বৃহত্তর নয়ডার জারচা থানা এলাকার পাতরাহি গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। গত শুক্রবার (১২ মে) চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং গত সোমবার (২৯ মে) তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে নয়ডার রানোলি লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা যোগিন্দর কুমার দ্বাদশ শ্রেণি পাসের একটি ভুয়া মার্কশিট সংগ্রহ করে সরকারি স্কুলে শিক্ষকের চাকরি পান। কিন্তু সম্প্রতি দাদরির ব্লক এডুকেশন অফিসার নরেন্দ্রকুমার শ্রীবাস্তবের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে যোগিন্দরের শিক্ষাগত যোগ্যতা খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই শিক্ষা অফিসার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
তাতে দেখা যায়, যোগিন্দর দ্বাদশ শ্রেণি পাশই করেনি। তিনি একটি ভুয়া মার্কশিট দেখিয়ে সরকারি স্কুলের চাকরি পেয়েছিলেন। এরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়, চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে যোগিন্দরকে। সেই সঙ্গে গত ২৬ বছর ধরে যোগিন্দর যা বেতন পেয়েছেন, তাও ফেরত দিতে হবে।
গৌতম বুদ্ধ নগরের শিক্ষা কর্মকর্তা ঐশ্বরিয়া লক্ষ্মী জানান, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরে একটি তদন্ত শুরু করি। পরে তাকে ১২ মে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং পরে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।
শিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানায়, যোগিন্দরকে তার বাবার মৃত্যুর পর ১৯৯৭ সালের আগস্টে একটি নির্ভরশীল কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, যিনি একজন সরকারি স্কুল শিক্ষক ছিলেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি মাসিক বেতন প্রায় ৮০ হাজার টাকা করে পেতেন। যদি অভিযোগ না পাওয়া যেত, তাহলে তিনি ২০২৬ সাল পর্যন্ত চাকরি করতে সক্ষম হতেন।
জার্চা থানার ইনচার্জ জ্ঞান সিং জানান, তার বিরুদ্ধে ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা ওই জেলায় আরও চার শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পেয়েছেন। সেগুলোরও তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় অনৈতিকভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন সাবেক মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি যায় মন্ত্রীকন্যার। ফেরাতে হয়, চাকরি জীবনে যত টাকা বেতন হিসেবে উপার্জন করেছিলেন তাও।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন