মোঃ সদরুল কাদির (শাওন), সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:: জেলার এক হাজার এজেন্টের চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে ‘বিকাশ’ এর সাতক্ষীরা জেলা ডিস্ট্রিবিউটর ফারুক হোসেন। এ ঘটনার পর এজেন্টদের মাথায় হাত উঠেছে। তারা এখন হায় হায় করছেন।
সোমবার সকাল থেকে জেলার এজেন্টরা তার খোঁজ পাচ্ছেন না। তাদের সব ফোন বন্ধ। তার অফিসে তালা, বাড়িতেও ঝুলছে তালা। এজেন্টদের বিক্ষোভের মুখে সদর থানা পুলিশ ‘বিকাশ’ অফিসের ম্যানেজারসহ তিনজনকে আটক করেছে।
সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে বিকাশ এজেন্টরা অভিযোগ করে বলেন অনেকদিন ধরে আমরা আমাদের চাহিদা মতো টাকা পাইনা। তারা বলেন আমাদের জমা থেকে তিন লাখ টাকা চাইলে দেওয়া হয় এক লাখ। এভাবে বেশ কিছুদিন যাবত তাদের ব্যবসাও বাধার মুখে পড়তে থাকে। তারা জানান এ নিয়ে প্রায়ই তাদের সাথে ঝগড়া হয়ে আসছে। এজেন্টদের অভিযোগ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর আমাদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে হুন্ডির কাজে ব্যবহার করছেন। লাভজনক কোনো গোপন ব্যবসার সাথেও জড়িয়ে গেছেন তারা।
অভিযোগ করে এজেন্টরা বলেন বিকাশ কর্মকর্তারা তাদের টাকা হাতে পেলেও ছাড়ছেন খুব কম টাকা। এতে আমাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। আজ সোমবার সকাল থেকে বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর ফারুক হোসেন ও তার অফিসের লোকজন অফিস থেকে উধাও। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলেন বিভাগীয় শহর খুলনায় অবস্থানরত জোনাল অফিসের লোকজনও এজেন্টদের ফোন ধরছেন না।
তারা অভিযোগ করে আরও বলেন আজ সকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফারুক তাদের ফোন করে জানান ‘যার যা টাকা দরকার সকাল দশটার আগেই আমার নম্বরে পাঠাতে হবে। বিষয়টি জরুরি’। এজেন্টরা বলেন আমরা সকালেই টাকা ঢুকানোর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি ফারুক প্রতারণা করেছে। সে তার লোকজন নিয়ে পালিয়ে গেছে। ফলে তাদের টাকা বিকাশ ডিলারের কাছে জমা থাকলেও তারা গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। সাথে সাথে বিষয়টি তারা পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে যেয়ে তিনজনকে খুঁজে পান । এরা হলেন ইব্রাহীম, বিশ্বজিত ও মো. মাসুমবিল্লাহ । তিনি জানান তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপরদিকে এজেন্টরা এ ব্যাপারে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে বিকাশ এর জোনাল অফিস খুলনায় ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেন নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগকারী এজেন্টদের মধ্যে রয়েছেন আদর এন্টার প্রাইজ, সোহেল এন্টার প্রাইজ, বুলবুল টেলিকম, মোবাইল প্যালেস, আহানাজ ফটো, কেসিও ওয়াচ, জয়া এন্টারপ্রাইজ, খোকন বুক ডিপো, রমজান টেলিকম, রাজু টেলিকম, রাজধানী এন্টারপ্রাইজ, জননী স্টোর, একে ইলেকট্রনিকস, তোহা মোবাইল, আরজু এন্টারপ্রাইজ, সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ, সুমাইয়া টেলিকম, মামুন এন্টারপ্রাইজ, রেজা এন্টারপ্রাইজ, তানভির স্টোর ও স্বপন এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধিরা।