বাজারে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডিমের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম দুই দিনে কিছুটা কমেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার আবার তা বেড়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় দুপুর ১২টার দিকে। বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা তিনটায়। আর বৈঠক শুরু হয় বিকেল চারটার পর। এতে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলক কম। বৈঠকে বাণিজ্যসচিব পেঁয়াজের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চান। জবাবে ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আমদানিকারক মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১৬ রুপি। আনার ভাড়া ৬ রুপি। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের পড়তা (লাভসহ মূল্য) পড়ে ৩২ টাকা। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের আগে চীনে আদার প্রতি টন দর ৮২০ ডলার ছিল। এখন সেটা ১ হাজার ২০০ ডলার ছাড়িয়েছে। ১ হাজার ১০০ ডলারের রসুন এখন ১ হাজার ৪৫০ ডলার। এভাবে দাম বাড়লে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কী করার থাকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভায় পেঁয়াজ কত দামে কিনে কত দামে বিক্রি করা হচ্ছে, তা তদারকির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। এ কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের যৌক্তিক মূল্যতালিকা বলছে, গতকাল ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের যৌক্তিক মূল্য হওয়া উচিত ছিল ৪৩-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের ক্ষেত্রে তা ৩৪-৩৮ টাকা।
ঢাকার খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহেও ৩৫ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকায় উঠেছে। এটাও কিছুদিন আগে ২৫-৩০ টাকার মধ্যে ছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতে মূল্যবৃদ্ধি, রপ্তানি প্রণোদনা তুলে নেওয়া এবং স্থানীয় পেঁয়াজের সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হওয়ায় দাম বাড়ছে। ভারত স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়ানো এবং দাম স্থিতিশীল রাখতে গত ১১ জুন পেঁয়াজ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা তুলে নেয়। আগে ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা পেঁয়াজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা পেতেন।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের আড়ত নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গল ও বুধবার দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম কমে প্রতি কেজি ৩০-৩১ টাকায় নেমেছিল। তা বৃহস্পতিবার আবার বেড়ে ৩৫-৩৬ টাকায় ওঠে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩১-৩২ টাকা, যা আগের দিন ২ টাকা কম ছিল। তিনি বলেন, পেঁয়াজের বাজার এখন ভারতের সঙ্গে মিলিয়ে ওঠানামা করছে। শ্যামবাজারে গতকাল প্রতি কেজি চীনা রসুন ১৪০ টাকা, দেশি রসুন ৯৫-১০০ টাকা এবং চীনা ও মিয়ানমারের আদা ১০৫-১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চীনা আদা ১৬০ টাকা, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের আদা ১৮০-২০০ টাকা, চীনা রসুন ১৬০ টাকা ও দেশি রসুন ১৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। ঈদুল ফিতরের আগেও রসুন ও চীনা আদার কেজি ১২০-১৩০ টাকার মধ্যে ছিল।
সুত্র : প্রথম আলো