‘আনপ্রেডিক্টেবল’ শব্দের সত্যিকারের উদাহরণ যে পাকিস্তান সেটা আবারও প্রমাণ করলো তারা। হারতে হারতে প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল অস্ট্রেলিয়াকে আবার জিততে জিততে নিজেরাই গেল। এই বুঝি পাকিস্তান!টনটনের ছোট মাঠে অজিদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। টসে হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের জুটি থেকে আসে রান। ২২ ওভার ১ বলে ১৪৬ রানের মাথায় ভাঙ্গে অ্যারন ফিঞ্চ আর ওয়ার্নারের জুটি। ৮৪ বলে ৮২ রান করে মোহাম্মদ হাফিজের বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন অজি অধিনায়ক ফিঞ্চ।বল টেম্পারিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দীর্ঘ এক বছর পর দলে ফিরেই পেয়েছেন বিশ্বকাপ। ওয়ার্নার সবশেষ শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন ভারতের মাটিতে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে।দ্বাদশ বিশ্বকাপে অজিদের হয়ে নিয়মিত দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ওপেনিংয়ের। গত ৩ ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গে ৮৯*, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ রানে আউট হলেও ভারতের বিপক্ষে করেছেন ৫৬ রান।আজ টনটনে পাকিস্তানের বিপক্ষেও খেললেন শতরানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ১১টি চার আর ১ ছয়ে ১১১ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলে ক্যাচ দেন শাহেন শাহ আফ্রিদির বল। ওয়ার্নার তার শতরানের ইনিংসে উঠে এসেছে এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দুই নম্বরে। এক নম্বরে আছে সাকিব আল হাসান।ওয়ার্নারের বিদায়ের পর বড় রানের স্বপ্ন ভেঙ্গে দেন মোহাম্মদ আমির। একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট।আমিরের তোপে অজিরা শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওভারে অল-আউট হয়ে যায় ৩০৭ রানে।পাকিস্তানের হয়ে ১০ ওভারে ২ মেডেন আর ৩০ রান দিয়ে একাই ৫ উইকেট নেন মোহাম্মদ আমীর। ২ উইকেট নেন আফ্রিদি ও ১টি করে উইকেট নেন হাসান আলী, ওহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ হাফিজ।জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসে তৃতীয় ওভারে পাকিস্তান হারায় তাদের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফখর জামানকে। প্যাট কামিন্সের ওভারে শূন্য রানেই ফেরেন এই ব্যাটার।দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাবর আজম আর ইমাম উল হক মিলে করেন ৫৪ রান। ১০ ওভার ৫ বলের মাথায় বাবরকে ৩০ রানে ফেরান কোলটা নীল। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ হাফিজ আর ইমামের জুটিতে ৮০ রান যোগ হলে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান।তবে এই ঘুরে দাঁড়ানোটা বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না কামিন্স। ইমাম উল হককে ৫৩ রানে ফেরান এই ডান হাতি পেসার।মোহাম্মদ হাফিজকে ৪৬ রানে ফেরান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। হাফিজের উইকেটটা ছিল ফিঞ্চের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ উইকেট।হাফিজের বিদায়ের পর দ্রুত উইকেট পড়তে থাকা পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের লাগাম টেনে ধরেন সরফরাজ আহমেদ আর হাসান আলী। ১৫ বলে ৩২ করা হাসান আলীকে ফিরিয়ে আবারও ম্যাচে ফিরে অস্ট্রেলিয়া।এই ফেরাটা বেশিক্ষণ টিকতে দেয়নি সরফরাজ আর ওহাব রিয়াজ। এই দুইয়ের জুটি থেকে আসে ৬৪ রান। পাকিস্তান জিতেই যাচ্ছিল ওহাবের ব্যাটে ভর করে।কিন্তু পারলো না। আনপ্রেডিক্টেবল বলেই হয়তো! ওহাবকে ৪৫ রানে ফেরান মিচেল স্ট্রাক আর সরফরাজকে রান আউট করে সাজঘরে ফেরান ম্যাক্সওয়েল।এখানেই শেষ পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন। ৪৫ ওভার ৪ বলে অল-আউট হয়ে যায় ২৬৬ রানে। ৪১ রানের জয়ে পয়েন্ট তালিকায় দুই নম্বরে উঠে এলো পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা।অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ উইকেট নেন কামিন্স, ২টি করে উইকেট নেন স্টার্ক ও রিচার্ডসন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন কোলটার নীল ও অ্যারন ফিঞ্চ।