মোঃলোকমান হোসেন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:-যশোর শার্শা গোগায় শাহা পরান(১২) নামে মাদ্রাসার ছাত্রকে হত্যার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও মূল সন্দেহভাজন আসামী একই মাদ্রাসার শিক্ষক হাফিজুরকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারিনি শার্শা থানা পুলিশ। উপরন্তু প্রধান আসামীকে আটকের তদন্তের নামে নিরীহ নারী-পুরুষদের বাসা থেকে থানায় নিয়ে ৩ দিন আটকে রাখার পর তিন লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান আসামী হাফিজুরের নিরীহ আত্নীয় স্বজনেরা৷ভুক্তভোগী আত্নীয়রা জানান মোঃওয়াহেদের মাধ্যমে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের কে ছেড়ে দেয়ার চুক্তি হয় সেই মোতাবেক ৩ লাখ টাকা ঈদের দিন অগ্রীম দিলে শার্শা থানা তাদেরকে রাতে ছেড়ে দেয়।সংবাদ কর্মীরা ঘটনার সুত্রে সরেজমিনে ভুক্তভোগী নিরীহ আত্মীয় শার্শার ডুবপাড়া গ্রামের মসজিদের ইমাম মোঃ হেদায়েতুল্লাহ(৫০)পিতাঃ আঃ আহাদ(হাফিজুরের ভগ্নিপতি) বাসায় গেলে তিনি এই অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।হেদায়েত উল্লাহ সহ তার বাসার ৩জন নারী বলেন ০২ই জুন ২৮শে রমজানের দিন প্রধান আসামীকে ধরার জন্য তার বাসা থেকে তার স্ত্রী রেশমা খাতুন(৩৫)চায়না বেগম (২৫)স্বামীঃ মুক্তাসুন বিল্লাহ,হাসিনা বেগম(২৮)স্বামীঃহাফিজুর রহমান,সহ চারজন ও যশোর চৌগাছা থেকে আরও একজন মোনাইম (৪৫)পিতাঃ শামসুর রহমান,শার্শা থানা পুলিশ ধরে নিয়ে আসে।তারপর থেকে তদন্তের নামে তাদের কে বিভিন্ন কৌশলে প্রধান আসামীর অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এভাবে দুইদিন অতিবাহিত হলে আমাদের এই হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃকততা না থাকার কারনে এবার চলে আমাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার টালবাহানা,পাশাপাশি চলে অর্থের মাধ্যমে লেনদেনের বিষয়টি৷হেদায়েত উল্লাহ বলেন,তার বোনাই ওয়াহেদ ডুবপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওসমান ও ইস্রাফিলের কাছ থেকে খুনের পর সদ্য মাঠের জমি বিক্রয়ের অগ্রীম নগদ ৩ লাখ টাকা এনে শার্শা থানার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি(দালাল)সৈয়দ আলীর মাধ্যমে শার্শা থানার এসআই মামুনের নিকট নগদ ৩ লাখ টাকা দিলে থানা থেকে ঈদের দিন বিকালে ৩ জন মহিলা ও ঈদের দিন রাতে এশার নামাজের পর আমাদেরকে ছেড়ে দেয় ৷তিনি আরও বলেন ঈদের পর আরও ৩ লাখ টাকা শার্শা থানায় দিতে হবে ও আসামী হাফিজুরেরঅবস্থান যদি তারা জানতে পারে সেই তথ্য থানাকে দিতে হবে এই শর্তে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
শার্শা থানার দালাল নামে পরিচিত সৈয়দ আলী (৫৫)পিতাঃ মৃত ওমর আলী,বলেন আমি মাঝে মাঝে থানার বিভিন্ন কাজ করে দেই বিধায় এই খুনের আসামী হাফিজুরের আত্নীয় হেদায়েত উল্লাহর পরিবারকে শার্শা থানার এসআই মামুন আমার জিন্মায় ছেড়ে দেয়৷তিনি অর্থ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন,তিনি বলেন হেদায়েত উল্লাহ মিথ্যা বলেছে,তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন তিনি তো শার্শা থানার কোন অফিসার নয় আবার কোন অর্থ গ্রহন করেনি তবে কেন তার জিম্মায় হেদায়েত উল্লাহসহ পাঁচজনকে ছেড়ে দেওয়া হলো ও এই সংক্রান্ত বিষয়ের(থানা থেকে মুক্তির)জন্য খুনের পর সদ্য জমি বিক্রয়ের অর্থ তাহলে কোথায় গেলো এর কোন উত্তর দিতে পারিনি তিনি ।হেদায়েত উল্লাহর বোনাই ওয়াহেদের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন,ওসমান ও ইস্রাফিলের কাছ থেকে হেদায়েত উল্লাহ সহ ৫জন আটকের দিনে নগদ ৩ লাখ টাকা ও ঈদের পর রবিবার আরও ৩ লাখ টাকা ইসলামী ব্যাংকের চেক নিয়ে আসি।তিনি বলেন তারা ভয়তে আবোল তাবোল আপনাদেরকে বলেছে।ডুবপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওসমান ও ইস্রাফিল খুনের পর ঈদের আগে ও পরে হেদায়েত উল্লাহর ৫০ শতক জমি বিক্রয়ের ৬ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।মৃত শাহা পরানের বাবা-মা মূল হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন।তিনি অভিযোগ করেন তারা গরীব বলে তার সন্তানের তদন্ত ধীর গতিতে চলছে।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত ইনর্চাজ এম মশিউর রহমান বলেন,প্রধান আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনাদের সু-সংবাদ দিতে পারবো। তিনি হেদায়েত উল্লাহর পরিবারকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং আরো বলেন যদি কেউ অর্থ নিয়ে থাকে তবে প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাভারন সার্কেল (এএসপি)জুয়েল ইমরান বলেন,আসামী খুবই চালাক ক্ষনে ক্ষনে তার অবস্থান পরিবর্তন করছে,কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে তাকে আটক করা যাবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান৷হেদায়েত উল্লাহর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তির জন্য অর্থ নেওয়ার কথা তারও জানা নেই,কেউ এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।