পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সমুদ্রের লোনা পানির চেয়ে কক্সবাজার অঞ্চলের লোনা পানির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই এ জেলায় প্রাকৃতিক উপায়ে লবণ উৎপাদন সহজ এবং দেশের লবণ উৎপাদনের প্রধান জেলা ও বটে। কক্সবাজারে উৎপাদিত লবন সারা দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। জেলার লবণচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। বর্তমানে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা । ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ দিতে পারছেনা না। আসন্ন এ ঈদে পরিবার ও বাচ্চাদের দিতে পারছেনা এক জোড়া কাপড়। তাদের দিকে কেউ তাকায় না, তাদের অধিকারের জন্য কেউ কথা বলেনা। তাদের বাঁচার দাবি নিয়ে কেউ আন্দোলন করছে না। তারা প্রতি বছর হাজার হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন করে । কেউ তাদের খবর রাখছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে যুবক যুবতীরা ধান চাষিদের জন্য আন্দোলন করছে। সরকার প্রতি মন ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে ১০৪০ টাকা। আন্দোলন করছে বলেই ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়েছে চাষি। ৪০ টাকা যদি হয় এক কেজি লবনের বাজার মূল্য, তাহলে তাদের কাছ থেকে এক মন লবণের দাম ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেন? লবণচাষিদের সারা দিন রোদে পুড়ে লবণ উৎপাদন করতে হয়। প্রতি বছর ৪০ শতাংশ জমিতে ১৪০- ১৭০ মন লবণ উৎপাদন হয়। বছর দুয়েক আগে লবনের ন্যায্য মূল্য পেয়েছিল লবণচাষিরা। মন প্রতি ৪০০-৫০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে মোটামুটি সংসার চালানো যায়। তারা যা উৎপাদন করে তা দিয়ে দেশের মানুষের লবনের চাহিদা মেটানো সম্ভব কিন্তু অসাধু কিছু ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে লবণ আমদানি করার কারনে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বর্তমান লবণের দাম প্রতিমণ ১৫০-১৮০ টাকা, এক্ষেত্রেও তাদের বেশিরভাগ সময় দেয়া হয় প্রতিমণ ১৩০-১৫০ টাকা । অধিকাংশ চাষীদের নিজেদের জমি নেই। বর্গা নিয়ে চাষ করতে হয়। প্রতি বছর জমির মালিককে এক সিজনে ৩০ শতাংশ জমির জন্য ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে বেশি খাজনা দিতে হয়, যেটা ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’। লবণচাষিরা বাঁচতে চাই লবণের ন্যায্য মূল্য চাই।