আয় বাড়ছে হ্যান্ডিক্রাফস্ বা দেশিয় হস্তশিল্প রফতানিতে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) আয় হয়েছে এক কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,দেশে হ্যান্ডিক্রাফটের সম্ভাবনা অনেক। কারণ,এখানে অল্প টাকায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়।তাই দেশের চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর পরিমাণে হ্যান্ডিক্রাফট বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে। তাই দেশে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুারোর (ইপিবি) তথ্যমতে,২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে হ্যান্ডিক্রাফস্ রফতানির পরিমাণ ছিল এক কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর পুরো বছরে রফতানি হয় এক কোটি ৬৭ লাখ ডলার। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে রফতানি হয়েছে এক কোটি ৭১ লাখ ডলারের হ্যান্ডিক্রাফটস পণ্য। ফলে দশ মাসেই উচ্চ প্রবৃদ্ধি এসেছে এ খাত থেকে।
বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বাংলাক্রাফট) তথ্য অনুযায়ী,শতরঞ্জি,বিভিন্ন আকৃতির ঝুড়ি,পাটের তৈরি থলে,পাপোশ,টেরাকোটা,মোমবাতি,নকশিকাঁথা,পাখির খাঁচা,বাঁশ ও বেতের বিভিন্ন সামগ্রী, চামড়ার তৈরি মুদ্রার বাক্স,বেল্টসহ বিভিন্ন ধরনের হস্তজাত পণ্য রফতানি করছেন উদ্যোক্তারা।এছাড়া দেশের ভেতরে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার বাজার আছে এ শিল্পের।
বাংলাক্রাফটের সভাপতি ও নিপুন ক্রাফস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুর রহমান বাসসকে বলেন,‘গত কয়েকবছরে দেশে-বিদেশে হস্তশিল্পের অনেক কদর বেড়েছে। ঘর সাজানো থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও বিভিন্ন নকশি ডিজাইন এখন সবার নজর কাড়ছে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। শুধু তাই নয়, এসব পণ্যের কদর দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তবে হস্তশিল্পের যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে সেটা আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না।এর প্রধানতম কারণ হলো কেন্দ্রিয়ভাবে কোনো প্রদর্শনব্যবস্থা না থাকায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্যের অধিকাংশই পৌঁছায় না।এছাড়া পণ্যের নকশা, কারুশিল্পীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য নেই কোনো প্রতিষ্ঠানও।সরকারের দিক থেকে এসব সমস্যা সমাধানে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
আশরাফুর রহমান বলেন, চীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড মুলত হ্যান্ডিক্রাফট উৎপাদনের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত, তারা এখন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির দিকে যাচ্ছে।ফলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করার সুযোগ আছে। আগে এসব পণ্যের ক্রেতা বাংলাদেশে আসত না,এখন তারা বাংলাদেশে আসছেন। তাই বিভিন্ন আঙ্গিকে এসব পণ্যের বাজার তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বাংলাক্রাফটের তথ্যমতে,বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে বর্তমানে হ্যান্ডিক্রাফট রফতানি হচ্ছে।উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মূলত বাংলাদেশের হ্যান্ডিক্রাফটের বড় বাজার।
বর্তমানে কারুপণ্য রংপুর,ঢাকা ট্রেড,আস্ক হ্যান্ডিক্রাফটস,কুমুদিনী,আড়ং,নিপুণ ক্রাফটস,সান ট্রেড,হিড হ্যান্ডিক্রাফটস,ক্রিয়েশনসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠান হস্তশিল্প পণ্য রফতানি করছে।বর্তমানে বাংলাক্রাফটের সদস্যসংখ্যা ৪০০।বাসস