তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস গত বৃহস্পতিবার ২৭ অক্টোবর বিকেলে মৌলভীবাজার পুরাতন কালী মন্দির নির্মাণে সৃষ্ট সমস্যা গুলো সরজমিনে পরিদর্শন করেন।
এসময়ে তিনি পুরাতন কালীবাড়ি মন্দির পরিচালনা কমিটিসহ সকলকে নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। সরজমিনে পরিদর্শন করে শ্রী শ্রী পুরাতন কালীবাড়ীতে মন্দিরের কোন অস্তিত্বই খুঁজে পান নি!
উপস্থিত শত শত মানুষের সামনে কালীবাড়ি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনবীর রায় মঞ্জু , সাধারণ সম্পাদক নিলিমেষ ঘোষ বলু ও পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আসু রঞ্জন দাশ, সাধারণ সম্পাদক মহিম দে কোন জবাব দিতে পারেন নি ।
এসময় লোকজন জড়ো হয়ে দোকান কোটা চাই না মন্দির চাই এ শ্লোগান দিতে দেখা যায়। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের একটাই দাবী, দোকান কোটা চাই না মন্দির চাই।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা শহরের পুরাতন কালীবাড়ি মন্দির প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল কয়েক মাস ধরে, নির্মাণ সূচনা লগ্নে ইঞ্জিনিয়ারিং ত্রুটির কারণে কমিটির নির্মাতারা উদাসীন থাকায় নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার দেখে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা শ্রী সুব্রত সরকার রাজ উপজেলা প্রশাসন এর হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ করেন এবং তদন্ত কমিটি প্রশাসনিক নির্দেশ মোতাবেক ছাদ ঢালাই ভেঙ্গে পুনরায় ছাদ নির্মিত হয়।
এদিকে স্থানীয় জগদীশ চন্দ্র দাশ বলেন এই মন্দিরের কোনো কার্যকরী কমিটি না থাকায় নির্মাণ কাজ সঠিক তদারকি হচ্ছে না বিধায় নির্মাণ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আবার সদর এলাকার নুতন কালীবাড়ি মন্দিরের কমিটি এই পুরাতন কালীবাড়ি মন্দির দেখভাল করেন।
ওই কমিটির (সভাপতি, সহ-সভাপতি, সম্পাদক সহ সদস্যদের) মেয়াদ কাল বিগত ৩ বছর পূর্বে শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে কয়েক জন ছাড়া নুতন কালী মন্দিরের কমিটির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে কাজ না করায় নানা ধরণের অনিয়ম দেখা দেয় ।
পিপুল রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট অনুদানের টাকা মন্দিরের জন্যে যেহেতু বরাদ্দ এসেছিল তাহলে উক্ত টাকা দিয়ে মন্দির ই নির্মাণ করা হোক। আমি বুঝতে পারি না কমিটির লোকজনের মাথায় দোকানদারী কেন ঢুকলো। এতে কমিটির লোকজন কি লাভবান হবেন ? মন্দিরের সংস্কার কাজ করতে যেয়ে মন্দির উচ্ছেদ করে দোকান কোঠা তৈরি হচ্ছে! এটি আমরা মানতে পারলাম না। বাংলাদেশের কোথাও এমন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যাবে না অতীতের দিনগুলোতে একজন দোকান কোঠা ভাড়া নিয়ে অন্যদের সাথে চুক্তি করে ভাড়া দিয়ে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে ব্যবসা করছে। কমিটির সদস্যরা পরিচিত লোকদের প্রশ্রয়ে এসব চলছে।
বাবুল দেব বলেন, মন্দিরে স্থানে কোনো শৌচাগারের এবং পানির ব্যবস্থা রাখা হয় নাই। মন্দিরের সংস্কার না করে দোকান কোঠা তৈরি বন্ধ করে, তাড়াতাড়ি মন্দির নির্মাণ করে ভুমি দস্যুদে্র হাত থেকে মন্দির রক্ষা করা হোক । এখানে সামান্য ভূমিতে বড় মন্দির নির্মাণের জন্য যথেষ্ট নয় , তবু ও অস্তিত্বের জন্য একটি আকর্ষণীয় দৃষ্টি নন্দন মন্দির এখন সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সময়ের দাবি কিন্তু দোকান কোঠা কেউই চান না বলে জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ি সঞ্জিত দাশ বলেন , জেলা পূজা উদযাপন পরিষদে ১৭ জন সদস্য নতুন কালী বাড়ি কমিটিতে আছেন কিন্তু পূজা কমিটি দোকানের পক্ষে অবস্থান থাকায় হিন্দু জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করেন । মানুষের মাঝে প্রশ্ন জেগেছে যে জেলা পূজা কমিটি মন্দিরের ভালো মন্দ দেখবেন কিন্তু তারা মন্দিরের জায়গায় দোকান তৈরি করছেন এতে হিন্দুদের অনেক প্রাচীন মন্দির হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের একটা দাবি এখানে দোকান না হয়ে মন্দির চাই।