স্পোর্টস ডেস্কঃ সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা পেলেন সাফজয়ী জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও তার পরিবার। সেখানেই মেয়েদের জন্য আলাদা খেলার মাঠ দাবি করেন ফুটবল কন্যা সাবিনা।
গতকাল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এবং দুপুর ২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবিনা খাতুন ও তার মা মমতাজ বেগম, বোন শিরিনা আক্তার এবং প্রয়াত কোচ আকবর আলীর স্ত্রী রেহানা আক্তার।
অনুষ্ঠানে সাবিনা খাতুনকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা অনুদান ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এছাড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান আশু, মাহমুদ হাসান মুক্তি প্রমুখ।
সফলতার স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেও সাবিনা ভুলছেন না শেকড়ের অস্তিত্ব। যেই সবুজবাগ থেকে তিনি আজ লাল-সবুজের পতাকাবাহী, সেখানে খেলোয়াড় তৈরিতে এখনো নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। তাই এখানে স্থায়ী মাঠের পাশাপাশি প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগের ফুটবল লিগ আয়োজনের দাবি ইতিহাস সৃষ্টিকারী অধিনায়কের।
সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমাদের ইচ্ছা আছে ভালো কিছু করার। আমরা যদি আশপাশে থাকা মানুষের সহযোগিতা না পাই, তবে আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাবে। আমি ডিসি স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আমাদের একটা মাঠ চাই। একটা নির্দিষ্ট মাঠ থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। আমাদের প্রথম ও দ্বিতীয় ডিভিশনের জন্য যখন খেলা হয়, তখন এই মাঠকে কাজে লাগানো যাবে।’
বাবাহারা পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সাবিনা খাতুন। ফুটবলে তার এই দীর্ঘ পথচলায় অনুপ্রেরণার সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন বড় বোনকে। আর তাই পরিবারের সচ্ছলতায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে চেয়েছেন সমর্থন।
সাবিনা খাতুন বলেন, ‘সাতক্ষীরাবাসী আমাদের যেভাবে ভালোবাসছেন, তা দেখে আমি বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। আমার পরিবার আমার ওপর নির্ভরশীল। তাই আমি বলছি, আমার বোনের জন্য যদি একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে খুব সুবিধা হয়।’
স্থায়ী মাঠ ও যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে সাতক্ষীরা থেকে উঠে আসবে অনেক ফুটবলার এমনটাই প্রত্যাশা হিমালয়জয়ী এই ফুটবলারের।
উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সাবিনা খাতুন হ্যাটট্রিক করেন এবং ৮টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি টুর্নামেন্টের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’ নির্বাচিত হন। গত শুক্রবার তাকে সাতক্ষীরায় ওরিয়ন স্পোর্টস একাডেমির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।