কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে গভীর রাতে এক সন্তানের জননী গৃহবধুর ঘরে ঢুকতে গিয়ে দায়ের কোপে এক যুবক আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার কিশামত শিমুলবাড়ী ঝাঁউকুটি এলাকায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
অভিযোগে জানা, ওই গৃহবধুর স্বামী কাজের সন্ধানে ঢাকায় থাকার সুবাদে একই এলাকার মৃত ছফর আলীর ছেলে লুৎফর রহমান তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার কু-প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় বিভিন্ন রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাত লুৎফর। এক পর্যায়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে লুৎফর রহমান আবারও ওই নারীর শয়ন ঘরের পাশে এসে নারীকে নিচু স্বরে ডাকতে ডাকতে ঘরের দরজা খুলে দেয়ার জন্য বলে। কিন্তু ওই নারী তাতে সাড়া না দিলে লম্পট লুৎফর টিনের বেড়া টপকিয়ে ভিতরে ঢোকে। এ অবস্থায় নিজের ইজ্জত বাঁচাতে ওই নারী দা দিয়ে লুৎফরকে আঘাত করলে তার কপাল ফেঁটে যায়। চিৎকার চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে লম্পট লুৎফর কৌশলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় মজিবর রহমান ও মমিনুল ইসলাম জানান, ওই নারীর স্বামী কাজের সন্ধানে ঢাকায় থাকায় লুৎফর গত এক বছর থেকে ওই নারীকে প্রায় সময় কু-প্রস্তাব দিতো। ওই নারী তার ডাকে সারা না দেওয়ায় লম্পট লুৎফর তাকে জোড়র্পবক ধর্ষন করার জন্য গেলে তাকে দা দিয়ে কোপায়। দায়ের কোপে লম্পট লুৎফর আহত হয়। আমরা লম্পট লুৎফরের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী গৃহবধু (৩০) বলেন, অনেক দিন থেকে লুৎফর আমাকে তার সাথে দৈহিক মেলামেশা করার জন্য কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় সে জোর পুর্বক ধর্ষনের হুমকি দেয়। সেদিন রাতে সে বেড়া টপকিয়ে আমার বাড়ীতে ঢোকে এবং আমাকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। আমি ইজ্জত বাঁচাতে দা দিয়ে ওকে আঘাত করি। পরে সে পালিয়ে যায়। আমি এ নির্যাতনের বিচার চাই। তিনি আরও জানান, অভিযোগ দেওয়ার তিনদিন অতিবাহিত হলেও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় চরম দুচিন্তায় আছি। এদিকে লম্পট লুৎফর হুমকি- ধামকি অব্যাহত রেখেছে।
ভুক্তভোগীর বড় বোন জানান, বোন জামাইয়ের কোন জমিজমা না থাকায় আমার বাড়ীতে থাকতো। আমার বোন জামাই ঢাকায় থাকায় লম্পট লুৎফর প্রায় সময় কু-প্রস্তাব দিয়ে আসতো এবং রাতের অন্ধকারে এসে আমার বোনকে বিরক্ত করতো। এর আগেও অনেক বার ধর্ষন করার জন্য বাড়ীতে এসেছে লম্পট লুৎফর। এ বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকেই জানেন। আমি লম্পট লুৎফরের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদুল হক জানান, লোকমুখে ঘটনা শুনে সকালে ওই বাড়ী গিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। ওই গৃহবধুকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি ওই নারীকে চিনি না।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।