ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফেরসাডাঙ্গী বাজারে গত বুধবার ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো উত্তরবঙ্গের ব্যাপক জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী কবিগানের পালা। শালি- দুলাভাইয়ের এই পালা কবিগান শুনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার শ্রোতার আগমন ঘটে ফেসাডাঙ্গী বাজারে।
উত্তরবঙ্গের মানবকল্যাণ কবি আর সংঘ এ কবি গানের আয়োজনে কবিগানে পুরুষ ও মহিলা কবিয়াল হিসাবে শালী দুলাভাইয়ের ভূমিকায় অংশ নেন উত্তরবঙ্গের জনপ্রিয় কবিয়াল মালতি রানী সরকার ও ক্ষিতীশ চন্দ্র সরকার। মোহাম্মদপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে অসংখ্য শ্রোতা আসেন এ কবি গান শুনতে।
অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ হোসেন।
মাঠের মাঝখানে বানানো মঞ্চে দুই কবিয়ালের বাক-বিতন্ডা আর তর্ক-বিতর্কের যুদ্ধ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মন্ত্র-মুগ্ধের মতো দর্শকদের নির্ঘুম রাত কাটে।
এক সময়ে কবি ক্ষিতীশ রায় সরকারের গান মন্ত্র-মুগ্ধের মতো শুনতেন এ অঞ্চলের শ্রোতারা।এ এলাকার মানুষের বিনোদনের একটি বড় মাধ্যম ছিল কবি, জারি, সারি গান। তার মধ্যে কবি গান ছিল অন্যতম। কালের বিবর্তনে এবং আধুনিকতার বেড়াজালে পড়ে এসব গানের শ্রোতা একদিকে যেমন কমে গেছে, তেমনি গায়কও কমে গেছে।
এ অঞ্চলে কবি গান প্রায় বিলুপ্তির পথে কিন্তু, শিকড় সন্ধানী কিছু মানুষ এখনও এ কবি গানকে খুঁজে বেড়ান মনের অজান্তে। রাতে আলো-আধারে কবিয়ালদের তাত্ত্বিক যুক্তি-তর্ক শুনতে জড়ো হন হাজারো নারী-পুরুষ। প্রখ্যাত এই দুই কবিয়ালের কবিগান শুনতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রোতা উপস্থিত হন।
অনেকেই আবার প্রথমবারের মত কবিগান শুনতে হাজির হন। তারা আগামীতেও এ ধরনের কবি গানের আয়োজন করবেন বলে আশা ব্যাক্ত করেন।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন ফেরসাডাঙ্গি হাট কমিটির সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ হোসেন জানান, প্রাচীন এ ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন ধরে রাখতে আগামীতে কবি গানের আয়োজন করা হবে।