মোঃ জহির হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে এসিল্যান্ডকে বালু উত্তোলনের সংবাদ দেওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলাকারী বালুখেকো সন্ত্রাসবাহিনীর গডফাদার জুলহাসের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর মডেল সদর থানায় সাধারণ অভিযোগ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার আওতাধীন ৪নং চররুহিতা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে মানিক মিয়া ইটভাটার গেইটের সামনে বেড়ীর উপরে ১৮ সেপ্টেম্বর ২২ (রবিবার) বিকেল পাঁচটায় জুলহাস ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ১৫ থেকে ২০জনকে নিয়ে, সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দৈনিক গণজাগরণের লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি রাকিব হোসেন সোহেল ও দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি নাঈম হোসেনের উপর হত্যার উদ্দেশ্য নারকীয় পৈশাচিক হামলা চালায়।
সেই হামলার প্রতিবাদে এবং ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় দৈনিক গণজাগরণের প্রতিনিধি রাকিব হোসেন সোহেল বাদী হয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর মডেল সদর থানার ওসি জানান,” আমরা অভিযোগ পেয়েছি, অপরাধীরা যত বড়ো শক্তিশালী হোকনা কেন খুব দ্রুতই সন্ত্রাসী বাহিনীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। এতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবেনা।”
হাসপাতালে আহত চিকিৎসাধীন সাংবাদিক নাইম হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আওতাধীন ৪নং চররুহিতা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড বাসিন্দা মোহাম্মদ জুলহাস মোল্লা দীর্ঘ ৫ বছর ধরে গোপনে বালু উত্তোলন করে আসছে। একই সাথে গত চার মাস ধরে বালু উত্তোলন করা স্থানীয় সুত্রে সংবাদ পেয়ে ঘটনার স্থলে গিয়ে দেখি স্থানীয় সুত্রে দেওয়া তথ্য সত্য। পরে বালু উত্তোলন করার বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর ভূমি কর্মকর্তাকে, দৈনিক গণজাগরণ পত্রিকার মুঠোফোন থেকে কল করে জানানো হয়। তিনি ঘটনার স্থলে দুইজন সংবাদ কর্মী দৈনিক গণজাগরণ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি রাকিব হোসেন সোহেল ও দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার প্রতিনিধি নাঈম হোসেন কে উপস্থিত থাকতে বলেন। পরে ভূমি কর্মকর্তা চররুহিতা ভূমি অফিসের অফিস স্টাফ শিশির দাসকে দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে বেড়ির নিচ দিয়ে নেওয়া পাইপের কিছু অংশ কেটে দেন চররুহিতা ভূমি অফিস স্টাফ শিশির দাস। আসার পথে বালু উত্তোলন সন্ত্রাস বাহিনীর গডফাদার জুলহাস মোল্লা সন্ত্রাসী দল ১৫ থেকে ২০জন দিয়ে দুইজন সংবাদ কর্মী কে মোটরসাইকেল করে আসার পথে বেড়ীর উপরে মোটরসাইকেল চলতি অবস্থায় জুলহাস মোল্লা হঠাৎ করে এসে গাড়ী আটক করে সাংবাদিদের গোষ্ঠি নাম ধরে গালমন্দ শুরু করে লাথি মেরে বেড়ি থেকে মানিক কোম্পানীর ইট ভাটার গেইট এর সামনে খালের পাশে ফেলে দিয়ে এলোপাতাড়ি দুইজন কে কিল ঘুষি মারতে থাকে বালু উত্তোলন কারী জুলহাস মোল্লা। এসময় দুইজন সংবাদ কর্মীর মধ্যে একজন কে পুরুষ গোপন অঙ্গে জোরসে লাথি মারে গুরুতর আহত করে। পরে হকিস্টিক দ্বারা কোমরে আঘাত করতে থাকে এবং কোমরের উপরে উঠে দাড়িয়ে বুট জুতা দ্বারা দীর্ঘক্ষণ পাড়া চড়া করে কোমরের দুইটি হাড় ভেঙ্গে যায় ও হাড়ের মাংস থেঁতলে যায়।
সন্ত্রাসী বাহিনী জুলহাস মোল্লা সংবাদ কর্মী উপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে মাথায় ও বাম হাত এবং ডান হাতে আঘাত করে জখম করার কথা জানানোর জন্য ভূমি কর্মকর্তা কে বহুবার কল করা হয়। কিন্তু মুঠোফোন রিসিভ করেননি।হামলা কারীদের হামলায় একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ও দুটি এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ভাংচুর করে নিয়ে যায় জুলহাস মোল্লা ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে। পরে আহত দুইজন সংবাদ কর্মী লক্ষ্মীপুর সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার নিকট গিয়ে ঘটনার কথা জানালে। তিনি সংবাদ কর্মীকে বলেন, আপনারা সংবাদ দিয়েছেন আমার পাইপ ভাঙ্গার দরকার ছিলো আমি আমার অফিস সহকারী দিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছি। আপনাদের উপর হামলা করেছে এটা ফৌজদারি মামলা করতে হবে, আপনারা থানায় গিয়ে মামলা দিন। একপর্যায়ে দুইজন সংবাদ কর্মী রাকিব ও নাঈম লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী ও বালু খেকো জুলহাসের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি বাড়িতে। থানায় অভিযোগ হওয়ার পর থেকে এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি মোস্তফা কামাল অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।