জোবায়ের আহমেদ, শেরপুর, বগুড়া প্রতিনিধি: খামারি মেহেদী হাসান বাবলু বর্তমানে পেশায় একজন সফল খামারি। বগুড়া শেরপুর উপজেলার স্যান্নাল পাড়ার বাসিন্দা পরিচিত মুখ, শিল্পী ওস্তাদ আবুল কাসেমের ছেলে। তিনি পেশায় ছিলেন একজন রং মিস্ত্রি। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে রং মিস্ত্রি থেকে হয়ে উঠেছেন একজন সফল খামারি।
ইউটিউবে ব্লাক সোলজার ফ্লাই চাষের ভিডিও দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, তিনিও একজন ব্লাক সোলজার ফ্লাই খামারি হবেন। যেই চিন্তা সেই কাজ। নিজের বাড়িতেই করে ফেললেন খামার। মাছি থেকে পোকা এবং সেই পোকা থেকে উৎপাদিত পোল্ট্রি খাদ্য এখন ব্যপক জনপ্রিয়। পোকা চাষি বলে বিদ্রুপকারী ও ঘৃনা করা ব্যক্তিরাই এখন তার তার থেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
২০২১ সালে বাবলু একটি ছোট্ট খামার গড়ে তুলেন তার শ্বশুর বাড়িতে। করোনার কারণে নিয়মিত খাদ্যের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে সব খামারি যখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তখন বাবুল বিকল্প চিন্তা করতে শুরু করেন। এরই আলোকে বাবলু ইউটিউব থেকে এইব্লাক সোলজার ফ্লাই চাষের পদ্ধতি শিখে ফেলেন।
তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে মা মাছি গুলোকে নেটের ভিতর ছেড়ে দিয়ে সেখানে কাঠের তৈরি পাত্রে পচা খাবার রেখে দেয়া হয়। মা মাছি গুলো পচা খাবার খেয়ে সেখানেই ডিম পাড়ে। সেই ডিম সংগ্রহ করে আবার প্লাস্টিকের পাত্রে সংগ্রহ করে রাখা হয়। সেখানে ডিমগুলো লার্ভাতে পরিনত হলে সেখান থেকে বিভিন্ন গর্তে সংরক্ষণ করার হয়। লার্ভাগুলোর বয়স বাড়লে তাদের পাখা গজায়, এরপর তাদের আবার মাছি রাখার জায়গায় ছেড়ে দেয়া হয়। এভাবে চলে মাছির বংশবিস্তার।
এই মাছির লার্ভা খামারের মুরগী গুলোর সেরা খাদ্য। শুধু তা-ই নায়, এখানে মরা মাছিগুলো মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। মুরগির খাদ্যের পাশাপাশি হাসের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয় এই ব্লাক সোলজার ফ্লাই।
এই চাষ পদ্ধতি সহজ ও সাশ্রয়ী হওয়ায় চাপ কমেছে বাজার থেকে কেনা খাদ্যের উপর। যে কারণে তার খামারের খরচ কমেছে অনেক। কারণ বাজারের বিভিন্ন কমদামি শাকসবজি এই মাঝির খাবার হিসেবে দেয়া হয়। এছাড়া মা মাছিকে দিনে দুই-তিনবার পানি স্প্রে করে দিলেই খাবারের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।
এই খামার তৈরি করতে বাবলুকে শুনতে হয় বিভিন্ন জনের বিভিন্ন কথা। অনেকেই তুলেন রুচির প্রশ্ন। কিন্তু তার সফলতা দেখ তার সমালোচনা করা ব্যক্তিরাই এখন তার কাছে আসছে এ বিষয়ে পরামর্শ নিতে। তিনিও নতুনদের আন্তরিকতার সাথে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তার স্বপ্ন, এই ব্লাক সোলজার ফ্লাই এর ব্যপক চাষের মাধ্যমে বাজার থেকে বিষাক্ত ফিডের চাহিদা কমিয়ে নিয়ে এসে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। তিনি তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশী।