ডিবিএন ডেস্কঃ কিংবদন্তি গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক, কাহিনিকার ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার আজ রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার মৃত্যুর সংবাদে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের শোবিজ অঙ্গণে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ও গায়ক-গায়িকা সোশ্যাল মিডিয়ায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রয়াত গীতিকারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
এ সম্পর্কে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পুত্রবধূ শাহানা মির্জা গণমাধ্যমকে জানান, ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাওয়ার সময় হঠাৎই পড়ে যান বাবা। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি। কয়েকদিন ধরে এসিডিটির সমস্যায় ভুগছিলেন বাবা। শনিবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। আজ রোববার আরও কিছু পরীক্ষা করার কথা ছিল।
অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা, কিংবদন্তি গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন তিনি। ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’-এর মতো অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা মাজহারুল আনোয়ার। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্ম নেন। ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লেখায়ও দক্ষতা দেখান তিনি। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪১টি।
এছাড়া, গাজী মাজহারুল আনোয়ার ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এ ছাড়াও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একাধিকবার বাচসাস পুরস্কারসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা ১১০।