তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: দৈনিক মজুরি ন্যূনতম ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করা শ্রমিকরা আগের মজুরি অর্থাৎ ১২০ টাকাতেই চা-বাগানে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোববার রাতে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চা-বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। সেখানে শ্রমিকরা আগের মজুরিতে বাগানে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে, শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অফিসে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
পরে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, রোববার (২১ আগস্ট) রাতে ৪ ঘন্টার আলোচনায় চা-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। বৈঠকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিবেন মজুরি নিয়ে চা শ্রমিকরা তা মেনে নিবেন। প্রধানমন্ত্রীর আস্থার উপর বিশ্বাস রেখে অব্যাহত ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন। তবে চুক্তিতে পরিস্কার উপস্থাপন করা যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রিয় সফরে দেশের বাহিরে আছেন, তিনি আসলে চা শ্রমিকদের সাথে ভার্চুয়ালি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন। আর প্রধানমন্ত্রীর না আসা পর্যন্ত চলমান ধর্মঘট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ধর্মঘট প্রত্যারের সত্যতা নিশ্চত করে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বস্ত করার কথা শুনে তার প্রতি আস্থা রেখে চা শ্রমিকরা আগের মজুরিতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনে নেব।
সভার নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো- প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ২২ আগস্ট থেকে কাজে যোগদান করবেন। আপাতত চলমান মজুরি অর্থাৎ ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করবেন। মজুরির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে বলে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
এছাড়া, আসন্ন দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার জন্য চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আবেদন করবেন যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপস্থাপিত হবে। চা-শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিসমূহ লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করবেন। জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীর সময় বিবেচনা জানাসহ তার কার্যালয়ে পাঠাবেন।
বাগানমালিকরা বাগানের প্রচলিত প্রথা/দর মোতাবেক ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।