হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের চাপোড় পার্বতীপুর গ্রামের ৫০ বছর বয়সী বিধবা হোসনেয়ারা। ৭ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর গত দুই বছর ধরে তার বাড়ির চলাচলের মূল রাস্তা জোরপূর্বক বন্ধ করে রেখেছে তার আপন ভাতিজারা। এই দীর্ঘ দুই বছরে তিনি বিচার পাইনি সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশের কাছে। গত শনিবার (১৩ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
৭ বছর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই বিধবা মহিলার উপর নেমে আসে একের পর এক নির্যাতন। একেই তো নেই স্বামী, সন্তান একমাত্র ছেলে সেও জীবীকার তাগিতে ঢাকায় গার্মেন্টসে। তাই কোন খানেই অভিযোগ করে লাভ হচ্ছেনা ওই বিধবার। ভাতিজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্তপ তৈরি হয়েছে যেন তার কাছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রধান রাস্তাটিও ২ বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছে তারা। কষ্ট করে একটি সরু গলি দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাকে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জুলাই গাছ রোপনের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাতিজারা মারপিট করে বিধবা হোসনেয়ারাকে । গুরুত্বর আহত হয়ে হোসনেয়ারা রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। চিকিৎসা শেষে থানায় আতিক হোসেনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে চুপচাপ রয়েছে, নেয়নি পরবর্তী পদক্ষেপ।
এ ঘটনা এছাড়াও ২০২০ সালে বিভিন্ন প্রজাতির ১০টি মূলবান গাছ জোর পূর্বক কর্তন করার অভিযোগ করে ভাতিজাদের বিরুদ্ধে। সেটিও সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম শালিস করে কোন সুরাহ দেননি। নিরুপায় হয়ে বিষয়টি থানায় জানালেও কোন কাজ হয়নি। ২০২১ সালে মে মাসে আবারও ভাতিজারা সংঘবদ্ধ হয়ে বিধবা চাচিকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি তার।
এ ব্যপারে অভিযোগকারি হোসেনয়ার আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, বাবু মোর কেউ নাই, চেয়ারম্যানক বিচার দেছু ওয়া দেওনিয়ালাক দায়িত্ব দেছে। পুলিশক অভিযোগ দেছু ওমা ঘটনা দেখে চুপ থাকছে। মোর বিচার কেউ করবেনি তুমা মোর সাথে নির্যাতন জুলুমের ব্যাপারলা পেপারত দ দেশবাসি জানোক, যে গরিব লোকের বিচার নাই টাকা ছাড়া উপায় নাই।
এ প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল থানার ওসি এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি মহিলাটি আইন আদালতে যেতে পারছেনা। আগামী শুক্রবার এর একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।