সাবিক ওমর সবুজ, শাজাহানপুর, বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে ঝড় বৃষ্টিতে বোরো মৌসুমে ধান কাটার ব্যস্তসময়ে এক হাজার টাকার বিনিময়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে কৃষকদের হতাশা। উপজেলার কাহালু, নন্দিগ্ৰাম, শাজাহানপুর, শেরপুর, ধনুট, শীবগঞ্জ, গাবতলীর এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে তাদের এমনি দুর্দশার কথা জানায় প্রতিবেদককে।
শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্ৰামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, ধান কাটার পর বৃষ্টির কারণে শ্রমিকরা চলে গেছে। ধান বহন করার জন্য ৫ দিন শ্রমিক খোঁজার পর অধিক মজুরিতে পেয়েছি। তবে বৃষ্টিতে ভিজে ধানের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
চোপীনগর গ্রামের কৃষক আব্দুল সাত্তার বলেন, ধান কাটার কাজের জন্য অনেক খুঁজে ১ হাজার টাকা দিয়ে শ্রমিক পেয়েছি। ধান আবাদে এ বছর খরচ অনেক বেশি।
মাদলা ইউনিয়নের কৃষক রবি সাহা বলেন, হাজার টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আবাদে খরচ অনেক বেশি, সে তুলনায় ফলন কম। এ বছর আমাদের অনেক লোকসান হবে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে আরো জানা গেছে, বোরো ধান যখন ফুলে বের হয়েছে, তখনই কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ নুয়ে মাটিতে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিদের খরচের টাকাও উঠবে না এবার। তাছাড়া শ্রমিক সঙ্কটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় শ্রমিকরা ধান কেটে দিতে চাচ্ছে না। ফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
কালবৈশাখি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এক কৃষক বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম মোটামুটি ভালো, তবে সময়মতো মাঠ থেকে ধান তুলতে পারব কি না সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তা। কারণ গেল কয়েকদিন আগে ধানের গাছ থেকে শিষ বের হওয়ার পর হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ধান মাটিতে পড়ে গেছে।
শ্রমিক সংকটের কথা উল্লেখ করে একজন কৃষক বলেন, মাঠের অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ এলাকায় ৮-৯শ টাকা মণ ধান। শ্রমিকের মজুরি বাবদ অনেক বেশি খরচ পড়ছে। হাজার টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
মজুরি বেশি নেওয়ার বিষয়ে শ্রমিকরা বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে তো মজুরি বেশি নিতেই হবে। যে টাকা পাই তা দিয়ে চাল, ডাল, তেল কিনতেই শেষ। চালের দাম বেশি। তেল, মাছ, মাংসের দামও বেশি।