তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছচোরদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন খোদ বনেরই এক কর্তা। তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বেপরোয়া এখন গাছ চোরচক্র। শুধু চিহিৃত গাছ চোরদের তিনি মদদ-ই দিচ্ছেন তা নয়, বনের কমিটিতে তাদের স্বজনদের পুনর্বাসিত করেছেন। স্থানীয়দের এমন অভিযোগ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আদমপুর বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের।
এ অভিযোগ এনে বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। রোববার (১৫ মে) সকাল ১১ টায় উপজেলার ইসলামপুর ইউপি নতুনবাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার চিহিৃত গাছ চোর চক্রের সদস্য মোসাহিদ মিয়ার যোগসাজসে বনের গাছ উজাড়ে বিট কর্মকর্তা জড়িত। তাকে গাছ চুরির সময় ধরে একাধিক ফোন দিলেও সেগুলো না ধরে বা ফোন রিসিভ না করে গাছ চোরদের সহযোগীতা করেন। এমনকি কখনো গাছ চুরির সময় গাছ ধরিয়ে দিলেও উল্টো যারা ধরিয়ে দিয়েছে- তাদের নামে উল্টো মামলা দেন। সৃজিত গাছগুলো পরিপূর্ণ হলেই মোসাহিদের সহযোগীরা তা চুরি করে কেটে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এর আগের বিট কর্মকর্তা শ্যামল রায় থাকাকালীন সময়ে ৩১ জনের একটি কমিটি করে দিলেও বর্তমান বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন আসার পর গোপনে অভিযুক্ত মোসাহিদের ভাইয়ের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে সভাপতি করে পোপনে একটি কমিটি করেছেন যা অবৈধ। কমিটিতে আদমপুর ইউনয়নে বসবাসরত তার বিবাহিত মেয়ের নামও রয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, মুসলিম মিয়া, বাহারাম মিয়া, কামিল মিয়া, আজাহার মিয়া ও শাহ আলম বলেন, মোসাহিদের সহযোগীতায় ও নেতৃত্বে সৃজিত বন ও সরকারের রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে শুধু আকাশমনি না লোহাকাঠ ও মেহগনি কাঠও পাচার করছে। আর এসবের সাথে বনবিভাগ জড়িত রয়েছে।
মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ কমিটি ভেঙ্গে প্রকাশ্যে স্থানীয় লোকজন নিয়ে নতুন উপকারভোগী কমিটি করার দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোসাহিদ মিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি এসবের সাথে জড়িত নন। তিনি বলেন, যারা অভিযোগ করছে, তারাই গাছ চুরির সাথে জড়িত। কিন্তু কমিটিতে তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও অন্যত্র বিবাহিত মেয়ের নামসহ তার অনেক আত্মীয়-স্বজনের নাম থাকা প্রসঙ্গে কথা বলতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘সরেজমিনে আসুন, সবকিছু বলব।’।
এ বিষয়ে আদমপুর বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ফোন না ধরা ও গাছ চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। যারা এগুলো বলছে- তারাই গাছ চুরির সাথে জড়িত।
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. তৌফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।