তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: প্রেমের শুরু মোবাইল ফোনে । তারপর দেখা করার সিদ্ধান্ত । প্রেমিকের পাঠানো সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে দেখা করতে আসে কিশোরী প্রেমিকাসহ তার বোন। সেখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। কথা বলতে বলতে শুরু হয় কথাকাটাকাটি, একপর্যায়ে ঘটনাস্থল টিলার ওপর থেকে প্রেমিকসহ অন্য সঙ্গীরা তাকে বিদ্যুৎ লাইনের ওপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন তার সঙ্গে থাকা আপন বোনসহ অন্য সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ সময় বৈদ্যুতিক তারে ঝলসে যায় তার শরীর। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় কিশোরী প্রেমিকাকে।
৭ মে (শনিবার) দুপুর দেড়টার দিকে মৌলভীবাজারে কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানায়, জুড়ী উপজেলার রানীমোড়া রসুলপুর নামক গ্রামের বাসিন্দা জামাল মিয়ার মেয়ে শিপা বেগম (১৫) এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেম হয় কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দা জীবন নামে এক ছেলের। বাস্তবে এ নামের কোনো ছেলের সন্ধান মেলেনি। সেই সুবাদে প্রেমিক দেখা করতে একটি সিএনজি অটোরিকশা পাঠায় প্রেমিকাকে আনতে। প্রেমিকের পাঠানো সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে রিপা আক্তার তানজিনা নামের আপন বোনকে নিয়ে প্রেমিকের সাথে দেখা করতে আসে শিপা। দেখা ও কথার একপর্যায়ে ঝগড়া বাধে উভয়ের মধ্যে।
তারা আরো জানায়, একপর্যায়ে জয়চন্ডী ইউনিয়নর ভূমি অফিসের পেছন দিয়ে প্রবাহিত পল্লী বিদুতের ১১ কেভি লাইনের ওপর প্রেমিকা শিপা বেগমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় প্রেমিকসহ অন্য সঙ্গীরা। এতে বিকট শব্দে বিদ্যুৎ লাইনে শব্দ হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এবং শিপার পরনের কাপড়ে আগুন ধরে যায়। এ সময় ওই এলাকার সড়কে মার্বেল খেলছিলে কয়েকটি শিশু। ঘটনা দেখে শিশুদের চিৎকারে ছুটে আসে স্থানীয়রা। এ সময় স্থানীয়রা আহত শিপা বেগমকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় প্রমিকসহ শিপা বেগমকে আনতে যাওয়া সিএনজি অটোরিকশা, তার আপন বোন রিপা আক্তার তানজিনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহত শিপা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
কুলাউড়া থানার এসআই মহসিন খবর পেয়ে কুলাউড়া হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি জানান, শিপার দেওয়া মোবাইল নম্বর অনুসারে তার মা ও মামাকে খবর দেওয়া হয়। খবর দেওয়ার ৫ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে মেয়েটির বাবা-মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা থানায় আসে।
এ সময় শিপার স্বজনরা পুলিশকে জানায়, তাদের দুই মেয়ে শিপা (১৫) ও রিপা (১৩) একসঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। তাদের এক মেয়ে হাসপাতালে আর অন্য মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে।