নগরায়ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয় (subject)। এই পাঠ্যসূচি পড়েই আধুনিক নগর পরিকল্পনা করে নগরবিদরা। কিন্তু বাংলাদেশের নগরবিদরা অপরিকল্পিত নগরায়ন করে রাজধানী ঢাকাকে বাজারে পরিনত করেছে। কয়েকজন হকার রাস্তায় মালামাল নিয়ে বসলেই সেখানে হকার মার্কেট গড়ার প্রয়োজন অনুভব করে তারা। পুরানো রেলওয়ে ষ্টেশন ফুলবাড়িয়া থেকে কমলাপুর স্তানান্তরিত হয় ১৯৬৮ সালে। তখন থেকেই পরিত্যক্ত জমিটি দখলে নেয় হকাররা। সেখানে হকার মার্কেটের সংখ্যা এখন বহু। হকার মার্কেট নির্মান করে রাস্তা হকার মুক্ত করা যায়নি। তবে মার্কেট নির্মান করে নগরবিদদের পকেট ভারি হয়েছে।
৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষন দিয়েছিলেন রমনা রেসকোর্স ময়দানে। সেখানেই পাকিস্তানি সৈন্যরা মিত্র বাহিনীর কাছে আত্নসমর্পন করেছিল। স্বাধীনতার পর মাঠটির নাম বদল করে সরোওয়ার্দি উদ্যান করা হয়। নির্মীত হয় ইন্দিরা মঞ্চ। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় এসে ইন্দিরা মঞ্চটি ভেঙ্গে নির্মান করে শিশু পার্ক। এই শিশু পার্ক অন্যখানেও নির্মান করা যেত। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে ইতিহাস মুছে ফেলতেই শিশু পার্ক নির্মান করে জেঃ জিয়া। শিশু পার্ক শিশুদের কতটুকু বিনোদন দিয়েছে জানিনা তবে রাতের বিনোদন জমে উঠেছে এইখানে। সরোওয়ার্দি উদ্যানে এখন বাজার বসে যৌন কর্মীর। ধুপখোলা মাঠ দখল হয়ে গেছে আগেই। সেখানে এখন জমজমাট হকার মার্কেট। ধানমন্ডি মাঠ, আবহানী মাঠ সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। আরমানিটোলা মাঠেটি চেনা যায় না। ষ্টেডিয়ামের পাশে খোলা মাঠ ছিল, সেখানে এরশাদ ষ্টেডিয়াম নির্মান করে দোকান বিক্রি করেছে ব্যবসায়ীদের কাছে। পুরো গুলিস্তান এলাকায় এখন কোন ফুটপাত নেই। সব হকারদের দখলে। ঢাকায় হকারদের কাছ থেকে প্রতিদিন টোল আদায় হয় ১০ কোটি টাকা। সিটি কর্পোরেশন মাঠ তত্বাবধায়নের দায়িত্বে। খেলাধুলার জন্য মাঠে কোন নির্মান কাজ করার আগে নগরবাসির বিনোদনের বিষয়টি ভাবার কথা। একইভাবে কলাবাগান মাঠটি দখলে নেওয়ার বুদ্ধিটি কার জানি না। তবে নগরায়ন কল্পে এট ভাল উদ্যোগ মনে হয়না। নদী দখলের মত ঢাকার মাঠ দখলদারিটি নগরবাসির জন্য সুখবর নয়। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবী জানাই।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা।