ডিবিএন ডেস্কঃ পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা। ঝুলন্ত তারের সনাতন পদ্ধতি বদলে দিতে শুরু হয়েছে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ ও সম্প্রসারণের কাজ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকার দুটি ভিআইপি সড়কের সব বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচে নেয়া সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছে বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসি।
আমূল পরিবর্তন আসছে রাজধানীর বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায়। পুরো ঢাকায় খুঁটিতে ঝুলন্ত তারের বদলে এখন মাটির নিচ দিয়ে যাবে বিদ্যুৎ লাইন। ঢাকায় ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ’ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি শুরুও হয়েছে। এর ফলে তেজগাঁওয়ের মণিপুরী পাড়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ডিপিডিসি’র দুটি প্রকল্পের কাজে করোনার কারনে এতদিন ধীরগতি থাকলেও, তা জোরেশোরেই শুরু হয়েছে করোনার পর। বর্তমানে নির্ধারিত রুটগুলোর প্রধান সড়কের দু’পাশে হরাইজোন্টাল ড্রিলিং ড্রাইভের কাজ চলছে।
আন্ডারগ্রাউন্ড হাইভোল্টেজ ক্যাবলিং নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে ভূগর্ভস্থ লাইনের সাহায্যে গ্রিড সাবস্টেশন থেকে গ্রাহক পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। কয়েকটি ধাপের হবে কাজটি এবং প্রথম ধাপে ২৯ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইন নির্মাণ করা হবে। রুটটি গাবতলী থেকে আজিমপুর এবং জাহাঙ্গীর গেট থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে।
জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আধুনিক রিং মেইন ইউনিট, আরএমইউ, লো-টেনশন ডিস্ট্রিবিউশন বক্স এবং কিয়স্ক ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০টি আরএমইউর মধ্যে ১৩টি এবং ২৪টি এলটিডিবির মধ্যে ১০টির ভিত্তি স্থাপনের কাজ শেষও হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতেই চালু হয়েছে ফার্মগেটের এ আরএমইউ স্থাপনাটি।
এ বিষয়ে বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির মাধ্যমে জানা যায়, আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে উন্নত ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক তারের ঝুঁকি কমবে। সেই সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ গাবতলী-আজিমপুর ও জাহাঙ্গীর গেট-বঙ্গভবন রুটের কাজ শেষ হবে।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো তেজগাঁওয়ের মণিপুরী পাড়ার আন্ডারগ্রাউন্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রাঙ্গণের একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে এই সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ধানমন্ডিকে স্মার্ট গ্রিডের আওতায় আনা হয়েছে। এতে পাঁচটি সাবস্টেশন করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় যদি একটা লাইন বন্ধ হয়ে যায় তবে অন্য একটি লাইন থেকে অটোমেটিক বিদ্যুৎ চলে আসবে। এটা শেষ করার কথা এ বছরে থাকলেও বাস্তবে রূপ দিতে বিস্তারিত পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় ২০২৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে এটা শেষ করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, পুরো ঢাকাকে ২০২৫ সাল এবং শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জে এই কাজ শেষ করতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার নীতিনির্ধারকরা।