মো.নাছির উদ্দিন, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ধারিয়ারচর হাজী ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে সহকারি শিক্ষক সফিকুল ইসলাম কর্তৃক ধর্ষণের বিচারের দাবীতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মানববন্ধন শেষে কিছু দৃস্কৃতিকারী বিদ্যালয় ভাংচুর করে।
সোমবার বেলা ১২টার সময় বিদ্যালয়ের মাঠে শান্তিপূর্ণ ভাবে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে ধর্ষক শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগন । শান্তি পূর্ণ মানববন্ধনকে কলংকিত করার জন্য কিছু দৃস্কৃতিকারী মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয় ভাংচুর করে একপর্যায়ে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম ঘটনাস্হলে পৌঁছে পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এই ভাংচুর এর ঘটনায় শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মহি উদ্দিন এবং জসিম উদ্দিনকে আটক করেছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগন শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছে। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি।
এলাকাবাসী ও ছাত্র ছাত্রীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায় তিনি একাধিক ছাত্র/ছাত্রীকে স্কুলের পাঁশে একটি ভাড়া বাড়ীতে প্রাইভেট পড়াতেন। প্রাইভেট শেষে দশম শ্রেনি ছাত্রীকে বিশেষ ক্লাস আছে বলে রেখে দিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকান্ড গুলো এলাকায় প্রচার হতে থাকে, এসব বিষয় নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
জানাযায় উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের চরছয়ানি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সফিকুল ইসলাম (৪৩) সে ধারিয়ারচর হাজী ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের সহকারি শিক্ষক তার ছেলে দশম শ্রেনিতে ও মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ে।
অভিযোগের বিষয়ে সহকারি শিক্ষক সফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার স্ত্রীকে জিঙ্গাসা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমেনা আক্তার বলেন আমি ঘটনা শুনে ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের সাথে ও বড় বোনের সাথে কথা বলেছি। পরে ছাত্রীর সাথে কথা বলি, সে বিয়ের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনা যাচাই বাচাই করতে বিদ্যালয়ের পরিচালনায় কমিটির সদস্য আশরাফ উদ্দিনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, স্কুল ভাংচুরের ঘটনা একটি মামলা হয়েছে। মামলার দুইজন আসামী কে গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জেল হাজতে পাঠাই। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা শমসাদ বেগম বলেন, বিষয়টি শুনার পর ওসিকে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্কুলের এক শিক্ষক এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও স্কুল ভাংচুর করেছে বলে শুনেছি। যেহেতু স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তাই উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।তবে কেউ আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।