৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় পর অনশন ভেঙেছেন ডাকসু নির্বাচনের পুনঃতফসিল ও নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন করছিলেন তাঁরা।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ ডাকসুর নেতারা অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে লাচ্ছি খাইয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান তাঁরা।
এ সময় ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘তোমরা আমাদের সঙ্গে বসো। আমরা তোমাদের সব অভিযোগ শুনব।’ আগামী ১৮ মার্চ সকাল ১০টায় আলোচনায় বসার ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘তোমাদের দাবিগুলো আমরা শুনব। স্বচ্ছতার কোনো শেষ নেই। পরবর্তী সময়ে আমরা আরো গুরুত্ব দেব।’
এ সময় ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘এ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, যা সবাই জানি। এজন্য কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করা হয়েছে আর রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করার ব্যাপারেও আমি একমত। আমি তোমাদের সঙ্গে আছি এবং আগামীতে থাকব।’
গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে কয়েক শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন – বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাওহীদ তানজিম, দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনিন্দ মণ্ডল, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাঈন উদ্দিন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়েব মাহমুদ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রনি হোসেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাফিয়া তামান্না, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মিম আরাফাত মানব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আল মাহমুদ তাহা। এর মধ্যে রবিউল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। তিনি ডাকসুর সমাজসেবা পদে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছিলেন।