হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এই জেলায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। সেটি করা হবে। এ লক্ষ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য আইনের মতো এখানে ৫৬টি ধারা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রপতি আচার্য হবেন। তিনি স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের মেয়াদে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেবেন। দুইজন থাকবেন উপ-উপাচার্য, একজন থাকবেন ট্রেজারার। এখানে একটি তহবিল থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি আরও জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়েও রেজিস্ট্রার অফিস থাকবে।
খসড়া আইনে আরও বলা হয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও শিক্ষাক্রম পরিচালনার জন্য বিধি-প্রবিধি করে নিতে পারবেন। বিধি ও প্রবিধিতে সব কিছু ডিফাইন করা হবে।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় জেলাবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। বিভিন্ন মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাচ্ছে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিশ্ববিদ্যালয়টি হলে বদলে যাবে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান।
ঠাকুরগাঁওয়ের সুনামধন্য শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে বলেন, উত্তরাঞ্চলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা খুবই কম ৷ আমাদের জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা নিয়ে সচেতন হবে। পাশাপাশি যে এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠানটি হবে সে এলাকার মানুষগুলোর জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ খুব জরুরি। আজকে অনুমোদন হয়েছে দেখলাম। তবে বিস্তারিত এ বিষয়ে পরে বলতে পারব। আশা করছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি হলে জেলার জীবনযাত্রার মান বাড়বে।
ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের নেত্রী। তিনি জনগণের জন্য কাজ করেন। সেই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ জননেত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ে এসে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দেন। তার মধ্যে তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেন। আজকে তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আমরা ঠাকুরগাঁওবাসী অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করছি আমাদের জেলার ছেলে-মেয়েরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে এবং উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে সচেতন হবে। পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
জেলা শহরের কোথায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে এমপি বলেন, সদর উপজেলার শিবগঞ্জ বিমানবন্দর এলাকার উত্তরে মুক্তা মেলার পাশে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।