রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করবে অনুমান করা গেছে আগে থেকেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হুশিয়ারী দিয়েছিল রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করলে ন্যাটো বসে থাকবেনা। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করেছে তিনদিন হয়ে গেছে। ন্যাটো বা আমেরিকা অর্থনৈতিক অবরোধ দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। ইতিমিধ্যে ইউক্রেনের রাজধানীও দখল হয়ে গেছে। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সাবওয়ের ভিতরে। বহু মানুষ পোল্যন্ডে চলে গেছে। জার্মানীর কাছে সাহায্য চেয়ে পাঁচ হাজার হেলমেট ছাড়া কিছুই পায়নি ইউক্রেন।
টেলিভিশনে যুদ্ধের বিভৎসতা দেখে বিশ্ববাসী স্তম্ভিত। একমাত্র যুক্তরাজ্য ছাড়া আমেরিকার সমর্থনে ন্যাটো দেশ থেকে আর কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। চীন রাশিয়াকে সমর্থন দিয়েছে প্রথম দিনেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চিঠি দিয়েছে কাতারকে। বিশ্ব তেলের বাজার ৭১℅ নিয়ন্ত্রন করে রাশিয়া, কাতার এবং ইরান। ইউরোপের বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিলে অনেক দেশেরই সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এক দিনের যুদ্ধেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। তেলের মূল্য বেড়ে দাড়িছে ব্যরেল প্রতি ১০৫ ডলারে। যুদ্ধ চলতে থাকলে পৃথিবীর অর্থনীতি ভেঙ্গে পরবে।
এখন ভয়টি হল ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেলে বিশ্বযুদ্ধ হবে নিশ্চিত। এমন সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফর দক্ষিণপুর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন সমীকরন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বেশী বিপদে ভারত। ভারত যদি আমেরিকার সঙ্গে যায় তাহলে রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের অবনতি হবে। এই সুযোগ চীন ছাড়বেনা। ইরান চীনের মতই রাশিয়ার সঙ্গে যাবে। ইউরোপেও ভেনিজুয়েলাসহ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে। রাশিয়া গ্যাস তেল বন্ধ করে দিলে ফ্রান্স জার্মানী সহ ইউরোপের অনেক দেশই সঙ্কটে পরবে। ন্যাটোর সদস্যরা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এক মত হতে পারবেনা। আমেরিকা যুক্তরাজ্যকে নিয়ে এমন অবস্থায় যুদ্ধে যাওয়ার সাহস করবেনা।
যুদ্ধ পরিস্থিতি যা হবার হয়ে গেছে কিন্তু বাংলাদেশও এখন সঙ্কটে। গার্মেন্টসের মুল বাজারটি ইউরোপে। গার্মেন্টস শিল্পে ধস নামবে দ্রুতই। ভারতের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন ঝুকির মুখে। ন্যাটো হয়ত শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে জড়াবেনা, কিন্তু বিশ্ববাণিজ্য ঝুকির মধ্যে পরবে নিশ্চিত। জাতিসংঘ কোন যুদ্ধই থামাতে পারেনি। বৃহৎ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংঘটি নিস্কৃয় সবসময়। করোনার পরে ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যাবে তা নির্ভর করবে বিশ্ব নেতাদের উপর।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, বিশিষ্ট সমাজসেবক, কলামিস্ট, টরন্টো, কানাডা।