অর্থকরী পণ্য হয়ে উঠেছে হেলাফেলার পাটকাঠি। পানের বরজ, পার্টিকেল বোর্ড ও চারকোল কারখানায় ব্যাপক চাহিদা এর। বর্তমানে চারকোল বা পাটকাঠির ছাই রপ্তানিও হচ্ছে। ফরিদপুরের কৃষকরা বলছেন, পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠলেও পাটকাঠি বিক্রির টাকা পুরোটাই লাভ। অনেকেই পাটকাঠি কেনাবেচাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। এতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। একসময় শুধু রান্নার জ্বালানি, পানের বরজের ছাউনি ও ঘরের বেড়া দেয়ায় পাটকাঠির ব্যবহার ছিলো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বেড়েছে এর বহুমুখী ব্যবহার। বর্তমানে পার্টিকেল বোর্ড তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাটকাঠি। কার্বন পেপার, ফেসওয়াশের উপকরণ, প্রসাধনী, এয়ারকুলার এমনকি সার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে পাটকাঠির ছাই। ফলে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলার পাটকাঠি যাচ্ছে চীন’সহ বিভিন্ন দেশে। বাড়তি চাহিদার কারণে আশ থেকে পাটকাঠি ছাড়ানো ও শুকানোর কাজটি বেশ যত্ন সহকারে করছেন, ফরিদপুরের কৃষকরা। তারা বলছেন, পাটের পাশাপাশি দুর-দুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন পাটকাঠি কিনতে। দামও পাচ্ছেন ভালো। কৃষকরা বলেন, ‘পাটে ভালো দাম না পেলেও এখন পাটকাঠি বিক্রি করে খরচ তুলে নিতে পারবো। পাটকাঠির মুঠো ৫ থেকে ৭শ’ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।’ পাটকাঠি বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানালেন এই কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কান্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের পানে বরজে ব্যাপক ভাবে ফরিদপুর জেলার পাটকাঠি ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানকার পাটের আঁশের মান যেমন ভাল। কৃষকদের দক্ষতায় পাটকাঠির মানও ভাল থাকে। পাটকাঠি থেকে তৈরি চারকোল বিদেশে রফতানি হচ্ছে।’ ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলার ৮২ হাজার ৭শ’ ১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।